ছোটবেলায় আনারস খাওয়ার পর মা দু’ধ খেতে বারণ ক’রতেন। এখনো অনেকেই বলেন দু’ধ আর আনারস একসাথে খাওয়া মানা। এই দুটি উপাদান একস’ঙ্গে খেলে নাকি মৃ’ত্যুর ঝুঁ’কি থাকে। একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে, আনারস আর দু’ধ একস’ঙ্গে খেলে মানুষ বি’ষক্রি’য়া হয়ে মা’রা যায়।
তবে এ কথার সত্যতা কতটুকু?বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, ‘আনারস ও দু’ধ একস’ঙ্গে খেলে বি’ষক্রি’য়া হয়ে কেউ মা’রা যায় এই ধারণা ভু’ল। এটি এক ধ’রনের ট্যাবু বা খাদ্য কু’সংস্কার। তাদের মতে, ‘আনারস একটি এসিডিক এবং টকজাতীয় ফল
দু’ধের মধ্যে যেকোনো টকজাতীয় জিনিস দিলে দু’ধ ছানা হয়ে যেতে পারে কিংবা ফে’টে যেতে পারে।দু’ধে কমলা কিংবা লেবু দিলে দু’ধ ফে’টে যায়। আর ফে’টে যাওয়া দু’ধ খেলে বদ হজ’ম, পে’ট ফাঁ’পা, পে’ট খা’রা’প– এ ধ’রনের স’মস্যা হতে পারে, তবে বি’ষক্রি’য়ার কোনো আশ’ঙ্কা নেই।
যাদের গ্যা’স্ট্রিকের স’মস্যা রয়েছে তারা যদি খালি পে’টে আনারস খায় তবে এ স’মস্যা আরও বেশি বেড়ে যায়।হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজে’র রেজিস্ট্রার ও মেডিসিন বিভাগ ডা. শ আ মোনেম বলেন, ‘এমন কখনো দেখিনি যে দু’ধ-আনারস একস’ঙ্গে খেয়ে মানুষ মা’রা গেছে।
এটা একটা কু’সংস্কার। আম’রা তো অনেক সময় ডেজার্ট, কাস্টার্ড বা স্মুদিতে আনারস-দু’ধ একত্রে মি’শিয়ে খাই। এগুলো খেলে তো কোনো স’মস্যা হয় না।’অ্যপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন, ‘দু’ধ একটি অ্যালকালাইন বা ক্ষা’রযু’ক্ত খাবার। অন্যদিকে আনারস হলো এসিডিক খাবার।
তাই, দু’ধ যদি পাস্তুরিত না হয় তবে কাঁচা দু’ধ ও আনারসের সমন্বয়ে শ’রীরে বি’ক্রিয়া হতে পারে। দু’ধ ও আনারসের সমন্বয় সঠিক না হলে শা’রীরিক স’মস্যা হতে পারে।আম’রা বিভিন্ন সময়ই পাইন অ্যাপেল কাস্টার্ড, ডেজার্ট, পাইন অ্যাপেল স্মুদি, পাইন অ্যাপেল মিল্ক সেক, পাইন অ্যাপেল সালাদ,
পাইন অ্যাপেল ইয়োগার্ট ইত্যাদি খাই। এতে স’মস্যা হয় না। কারণ এসব খাবারে খাদ্যের সঠিক সমন্বয় থাকে এবং নিয়মমাফিক বা সঠিক নিয়মে বানানো হয়। কিন্তু কেউ যদি এক গ্লাস দু’ধ খান, পাশাপাশি আনারস খান, সেক্ষেত্রে সঠিক খাদ্যের সমন্বয় হয় না।
যার ফলে পা’তলা পা’য়খা’না, ব’দ হজ’ম,এসিডিটি ইত্যাদি স’মস্যা হতে পারে। তবে বি’ষক্রি’য়া হয়ে মৃ’ত্যু হওয়ার আশ’ঙ্কা নেই।তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আনারস আর দু’ধ বিরতি দিয়ে খাওয়াই ভালো। অর্থাৎ একটি গ্রহণের ২/৩ ঘণ্টা পর অন্য খাবারটি খেলে আর হ’জমের স’মস্যার ভ’য় থাকে না। তবে যদি সঠিক নিয়মে খাবার বানানো হয় এবং সঠিক খাদ্যের সমন্বয় থাকে তাহলে কোনো স’মস্যা হবে না। অর্থাৎ দু’ধ ফু’টিয়ে নিলে কিংবা পাস্তুরিত করলে এতে টক্সিটিক আর থাকে না। তাই তখন খাওয়া যায় সহজেই। অর্থাৎ সঠিক উপায়ে ও সঠিক খাদ্যের সমন্বয়ে আপনি দু’ধ ও আনারস একস’ঙ্গে খেতে পারেন।