বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার তিন বছর পূর্তি আজ। তার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগরীসহ দেশে সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিএনপি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দু’র্নী’তি’ মা’মলা’য় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দু’র্নী’তি
মা’ম’লায়ও তার সাজার রায় হয়। তার বিরুদ্ধে আরো ৩৪টি ‘মা’ম’লা রয়েছে। ২৫ মাসের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর গত বছরের ২৫ মার্চ করো’না’কালে খালেদা জিয়া পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। এরপর আরো এক দফা তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়
জামিনে মুক্তির পর থেকে তিনি তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় রয়েছেন। তবে দলটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়া এখনও মুক্ত নন, তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। পার্থক্য এটুকুই যে, তিনি ঘরোয়া পরিবেশে থাকতে পারছেন। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো নয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘সরকার যে উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি দিয়েছিল, তা সফল হয়নি। কারণ, ক’রো’নাজ’নিত পরিস্থিতিতে অন্য কোনো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ হয়নি। সরকারের উচিত, খালেদা জিয়ার সম্মতি সাপেক্ষে তার সুষ্ঠু চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে রাজি হওয়া।’
তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী কোনো সাজার কার্যকারিতা শর্তহীনভাবে স্থগিত করার ক্ষমতা পুরোপুরি সরকারের হাতে। আমরা চাই তার শর্তহীন মুক্তি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে তিন বছর ধরে বন্দি করা হয়েছে। গত মার্চে কারাগার থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হলেও তিনি মূলত গৃহবন্দি।
খালেদা জিয়ার ‘কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে আজ ঢাকাসহ সারাদেশের সব জেলা ও মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। রাজধানীতে এ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল ১১টায় সমাবেশের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফার মুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবারও খুব শিগগির আবেদন করা হবে। বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে যথাসময়ে অবশ্যই এ আবেদন করা হবে।
বর্তমানে খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের বাসা ‘ফিরোজা’য় আছেন। তার চিকিৎসার সবকিছু লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধান করছেন। তার সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন অবস্থান করছেন। প্রায় প্রতিদিনই ভাই-বোন দেখতে যান তাকে। এ সময় তারা এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাটান।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া নামাজ, বই ও পত্রিকা পড়ে, টেলিভিশন দেখে এবং দেশে-বিদেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে সময় কাটাচ্ছেন। তার অবস্থার কোনো উন্নতি নেই।