চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. মাহফুজুল হকের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরকীয়া, নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে মামলা করেছেন তার স্ত্রী সোনিয়া। গত ১৭ নভেম্বর মামলাটি করেন তিনি। শুক্রবার (২০ নভেম্বর) মামলার বিষয়টি জানা যায়।
মামলার আর্জিতে মেয়রের স্ত্রী সোনিয়া উল্লেখ করেন, ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক ২০১০ সালে মো. মাহফুজুল হকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের তিন সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর মেয়ের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে বাবা তাকে স্বর্ণালঙ্কার ও ঘরের সব আসবাবপত্র দেন। পরে ব্যবসার কথা বলে মাহফুজুল হক শ্বশুরের কাছ থেকে পাঁচ লাখ এবং তার ভায়রার কাছ থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা ধার নেন।
বিপত্তি ঘটে বিয়ের পরই। স্ত্রী সোনিয়া পরে লক্ষ্য করেন, তার স্বামী মাহফুজুল হক একজন মাদকসেবী ও পরকীয়ায় আসক্ত। তিনি পরকীয়ায় লিপ্ত। প্রায়ই মাদকসেবন করে তাকে মারধর করেন।
সোনিয়া জানান, এতসব সত্ত্বেও শুধু সন্তানদের কথা চিন্তা করে তিনি সংসার করে আসছেন। মাহফুজুল আরও পাঁচ লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান। এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
স্ত্রী সোনিয়া প্রায় আড়াই মাসের গর্ভবতী। এমন অবস্থায়ও মেয়র মাহফুজুলের নির্যাতন থেমে থাকেনি। তাকে পাঁচ লাখ টাকা না দিলে স্ত্রীকে ঘরে থাকতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
স্ত্রী সোনিয়ার দাবি, এ ঘটনায় সামাজিকভাবে সালিশ মীমাংসা করতে চাইলেও মেয়র তা মানতে রাজি হননি। একপর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এ সময়ও অব্যাহত হুমকি দিতে থাকেন মেয়র মাহফুজুল।
পরে উপায় না দেখে স্ত্রী সোনিয়া ফরিদগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিতে গেলে তাকে চাঁদপুরে আদালতে মামলা দেয়ার জন্য বলা হয়। গত ১৭ নভেম্বর চাঁদপুর আদালতে মামলা দেন সোনিয়া।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র মাহফুজুল হক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচনের অন্তিম মুহূর্তে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের একটা মামলা সম্পূর্ণ প্ররোচিত। আমার পারিবারিক মামলায় কাউন্সিলরদের অনাস্থা জ্ঞাপন এটাই প্রমাণ করে যে, এখানে একটি চক্র আমাকে হেয় করার জন্য চক্রান্ত করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে-আমি তাকে শারীরিক নির্যাতন করেছি। কিন্তু গত ৯ মাস সে তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছে। তাহলে কীভাবে আমি তাকে শারীরিক নির্যাতন করতে পারি?’