সরকার পরিবর্তনে বিএনপি গণজাগরণের প্রত্যাশা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
গয়েশ্বর রায় বলেন, দলের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্য অর্জনে, কোথায় মৃত্যু হবে কোথায় হবে না, সেটা নিয়েও বিএনপির নেতারা ভাবেন না। তারা শুধু একটা সুযোগ একটা পরিবেশের অপেক্ষায় আছেন। একটা গণজাগরণের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, একাত্তরের যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, আজকের তরুণ সমাজকে বলব, আগামীর দিনটা আপনাদের। আপনাদের বয়সে আমরা বাংলাদেশ কেমন দেখব, সেটা ভেবে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু যে বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিলাম, সেই বাংলাদেশ দেখতে পারিনি এখনো। সেই বাংলাদেশ দেখার যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে আপনাদের পাশে আমরা আছি।
‘আমরা সামনে থাকতে বললেও আছি, পেছনে থাকতে বললেও আছি। অর্থাৎ আমরা কখনোই আপনাদের ছেড়ে যাবো না।’
দোয়া মাহফিলে তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ নেছারুল হক।
গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আমাদের ওপরে নিষেধ আছে- যার জন্মদিন উদযাপন করছি স্বয়ং তার পক্ষ থেকেও আহ্বান আছে যে, কেক কাটা নয়। দোয়া এবং পারলে গরিবদের মাঝে কিছু সাহায্য সামগ্রী দেওয়া। কিন্তু আবেগ তো এই নিষেধ মানে না। আজকে কম হলেও ১০ হাজার কেক কাটা হবে। কারণ আবেগের জায়গায় কিন্তু বাস্তবতা পরাজিত হয়।’
‘জাতীয়তাবাদের একমাত্র ঠিকানা তারেক রহমান। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আজকে জেলবন্দি থেকে গৃহবন্দি। এই যে একটা অবস্থা, এই অবস্থা অতিক্রম করতে পারে এই তরুণ সমাজ ও যুব সমাজ, যারা যুগে যুগে পরিবর্তন ঘটিয়েছে।’
‘আগামীর দিনটা কিন্তু আজকের যুবকদের, আজকের তরুণদের। সে কারণে আগামীর বাংলাদেশটা কেমন হবে, কেমন দেখতে চান তার জন্য আপনারা সক্রিয় হয়ে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। যার অগ্রভাগে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে নেতৃত্ব দেবেন তারেক রহমান। আজকে থেকে আমরা চেষ্টা করি আগামী দিন যেন আমাদের তার নেতৃত্বে, তার উপস্থিতিতে জন্মদিন উদযাপন করতে পারি।’
বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আমিনুল হক, মীর সরফত আলী সপু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, হারুনুর রশীদ, অঙ্গ সংগঠনের নেতা কাজী আবুল বাশার, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, সাদেক আহমেদ খান, কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, নজরুল ইসলাম তালুকদার, এসকে সাদী, মেহেদী হাসান পলাশ, আবদুর রহিমসহ কয়েকশ’ নেতা-কর্মী দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে তিনটি কেক কাটেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও সহ-সভাপতি ইউনুস মৃধা।
দিনের প্রথম প্রহরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কার্যালয়ে কেক কাটেন সংগঠনের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামল, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
বিকেল সাড়ে ৩টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে দুঃস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করা হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল।