একজন আনসার সদস্য ও একজন গ্রাম পুলিশ প্রত্যেক প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে দিনে দুইবার খোঁজ নিচ্ছেন এবং প্রতিবেশীদের মাধ্যমে তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখছে প্রশাসন
কুষ্টিয়ায় সম্প্রতি বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের শনাক্ত করে তাদের বাড়ির সামনে লাল পতাকা টাঙিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আসা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় প্রত্যেক থানার ওসিরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নিয়ে এই কাজ করছেন।
পুলিশ জানায়, লাল পতাকা স্থাপনের পাশাপাশি এসব বাড়ির ফটকের সামনে প্রবাসীদের দেশে আসার তারিখ লিখে স্টিকার সেটে দেওয়া হচ্ছে এবং হাতে সিল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলার ছয়টি উপজেলায় গত ১ মার্চ থেকে ১ এক হাজার ১৩৯ জন প্রবাসী তাদের গ্রামের বাড়িতে এসেছেন। এদের মধ্যে ৭ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত বিদেশ থেকে আসা ৭১৩ জনকে সনাক্ত করে তাদেকে হোম কোয়ারেন্টিন রেখেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানায়, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী এসেছে দৌলতপুর উপজেলায় ৩৯৮ জন ও ভেড়ামারা উপজেলায় ২৭০ জন। জেলায় ইতালি, সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আগত প্রবাসীর সংখ্যা বেশি। তারা বাড়ি আসার পর যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীদের তালিকা পাবার পর পুলিশ জোরালো অভিযান শুরু করে জেলায়। এই অভিযানের নাম দেয়া হয় “ক্রাস কর্মসূচি”।
ক্রাস কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে গিয়ে সদ্য দেশে আসা প্রবাসীদের শনাক্ত করছে পুলিশ। একজন আনসার সদস্য ও একজন গ্রাম পুলিশ প্রত্যেক প্রবাসীর বাড়িতে দিনে দুইবার খোঁজ নিচ্ছেন। ওই প্রবাসীর প্রতিবেশীদের মাধ্যমে তাদের গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে। ঘরের বাইরে বের হলেই প্রবাসীদের মোটা অংকের জরিমানা করা হচ্ছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আরিফুর রহমান বলেন, “উপজেলায় প্রবাসীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। চরাঞ্চলেও প্রবাসী আছে। তাদের প্রত্যেকের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। নিয়মিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে তাদের।”
পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, “প্রবাসীদের কড়া নজরে রাখা হয়েছে। তারা যাতে ঘরের বাইরে ১৪দিন বের না হতে পারে সে ব্যাপারে পুলিশ সজাগ রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সবাই সুস্থ আছে। সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করে ১৪ দিন হয়ে গেলে পর্যায়ক্রমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে চলার অনুমতি দেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, “করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করে আটটি কৌশল গ্রহণ করেছে। সেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে লকডাউন করার বিষয়ও আছে। যদি কোনো এলাকা লকডাউন করা লাগে সেক্ষেত্রে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ওষুধপত্র কিভাবে পৌছাবে ও কী করনীয় সে ব্যাপারেও প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের।”