খুব খুশী হয়ে মাসের শুরুতে পাওয়া বেতন হাতে গেলেন একটা সখের জামা কিনতে। অথবা কিনলেন এক জোড়া জুতো, সুন্দর কোন ব্যাগ। মনে করে দেখুন তো, কেনাকাটার এই আনন্দ কতদিন স্থায়ী হয়? এগুলো আমাদের সাময়িক আনন্দ দেয় সত্যি, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সুখ কোন বস্তু দিতে পারে না। আর সুখ সেটাই দীর্ঘস্থায়ী হয় যার সাথে জুড়ে থাকে সুন্দর অনেক স্মৃতি।
গবেষণায় দেখা গেছে, যা পাওয়ার জন্য আপনি অনেক শ্রম দেন, আনন্দ লাভ করেন, আপনার মন এবং আত্মার শান্তি হয় সেই পাওয়া আপনার জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। দোকানে গেলে টাকার বিনিময়ে চটজলদি পাওয়া জিনিস তার আকর্ষণও হারিয়ে ফেলে দ্রুত। খেয়াল করে দেখুন, কয়দিন পরই আরেকটা জামা কিনতে ইচ্ছে করে আপনার। অনেক অনেক পোশাক থাকার পরও আপনি কিছুই পান না যা পরে পার্টিতে যাবেন। এমনটা শুধু আপনার সাথেই হয়, তা নয়। সবার সাথেই হয়।
তাহলে কোন কাজের সুখ হবে দীর্ঘস্থায়ী? বিশেষ করে কোন কাজটি একইসাথে দিতে পারে আনন্দ আবার সুখ? গবেষণা বলছে, ভ্রমণই একমাত্র আপনাকে এই অনুভূতির সাথে পরিচিত করতে পারে।
নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা মানুষের স্বল্প সময়ের সন্তুষ্টির এই হতাশাজনক সাইকেলকে চ্যালেঞ্জ করেছে। মনোবিজ্ঞানী টমাস গিলোভিচ তার গবেষয়াণায় দেখান আমরা যখন কিছু ক্রয় করি এবং কোথাও ভ্রমণে যাই তখন আমাদের আনন্দ এবং সুখের মাত্রা একই হারে বাড়ে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হল কেনাকাটার সুখ মিলিয়ে যায় কিছু সময় পরেই। কিন্তু ভ্রমণের সুখ দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় মানুষের মস্তিষ্কে।
কারণ ভ্রমণের সাথে জড়িয়ে থাকে দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা। ধীরে ধীরে টাকা জমিয়ে আপনি ট্যুর প্ল্যান করেন। তারপর জীবনের সকল স্ট্রেসকে পিছনে ফেলে শুধু সৌন্দর্য্যের মাঝে হারিয়ে যেতে বেরিয়ে পড়েন। এরপর সেই সময়ের সময়কার সব স্মৃতি নিয়ে ফিরে আসেন। ব্যস্ত জীবনে বেঁচে থাকার জীবনীশক্তি হয়ে থাকে সেই স্মৃতি। যতবার আপনি ক্লান্ত বোধ করেন ততবার আপনার মন ঘুরে আসে সেই সময়ে, দেয় সেই সুখের অনুভূতি।
ভ্রমণের পাশাপাশি আরও কিছু কাজ আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি আনন্দ দেবে। যেমন ভিন্ন কিছু শেখা। আপনি যদি সাঁতার শেখেন তাহলে যতবার সাঁতার কাটবেন আপনার মধ্যে একটা ভাল লাগা কাজ করবে। আপনি যদি গান করতে ভালবাসেন এবং চর্চা করেন গানই আপনার মনে খোরাক যোগাবে। আর যদি ভরে তুলতে চান রোমাঞ্চময় স্মৃতির ভান্ডার তাহলে বেরিয়ে পড়ুন ভিন্ন ভিন্ন জায়গা ভ্রমণে।