ডিআইজি মিজান কি ৪০ লাখ টাকার উৎস দেখাতে পারবেন?

জীবনে যা কিছু বুঝলাম না তার তালিকা এত লম্বা যে এখন আর মন খারাপ করি না৷ শুধু মনে পুঁটি মাছের কাঁটার মতো অস্বস্তি খচখচ করে৷

দুদকের একজন পরিচালককে পুলিশের একজন ডিআইজি ঘুষ দিয়েছেন, ফোন রেকর্ড রেখেছেন তা সাংবাদিককে দিয়েছেন, এমনকি ক্যামেরার সামনেও সেকথা বলেছেন৷

পুলিশের সদস্যরা ঘুস দেওয়া-নেওয়া করবেন, দুদকের কর্মকর্তারা ঘুস নেবেন এ আর নতুন কী! কিন্তু পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ঘুষ দেওয়ার রেকর্ড রাখবেন আর কাজ না হলে নিদান চাইতে গণমাধ্যমের আশ্রয় নেবেন এরকম তো আর মনে হয় শুনি নাই৷ যতদূর জানি, ঘুষ নেওয়া-দেওয়ার মতোই অপরাধ৷

তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই, ঘুস দেওয়া অপরাধ না, তবুও ডিআইজি সাহেব কি ৪০ লাখ টাকার উৎস দেখাতে পারবেন? পুলিশের বেতন কত আমাদের দেশে?

এমনও হতে পারে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা ব্যবসা-বাণিজ্য করেন, তাদের কাছে ৪০ লাখ কেন ৪০ কোটি টাকাও থাকতে পারে৷ সেক্ষেত্রে এরকম পারিবারিকভাবে ধনী আর কত ডিআইজি বা অন্যান্য ‘জি’ আছেন দেশের পুলিশবাহিনীতে?

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে কি আমাদের একটি ডিসক্লেইমার দেওয়া হবে সব কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব নিয়ে? বেশি কিছু করতে হবে না, যে-কোনো পুলিশ অফিসারের গত দুই-পাঁচ বছরের ট্যাক্স ফাইল কি আমরা দেখতে পারবো চাইলে?

আমার আরো কত যে তালিকা পেতে ইচ্ছে করে; যেমন ধরুন ঢাকা শহরের সবচেয়ে দামি গাড়িগুলোতে কারা চড়েন? কারা নিয়মিত খান এত এত সব দামি রেস্টুরেন্টগুলোতে? কাদের ছেলেমেয়েরা পড়ে লাখ টাকা দামের স্কুলে?

ঘুষপ্রদানকারী ‘অসহায়’ ডিআইজি জনাব মিজানের কথায় ফিরে আসি৷ সত্যি কি তিনি জানতেন না যে, দুদক পরিচালককে ঘুষ দেওয়ার কথা বলে তিনি বিপদে পড়তে পারেন? নাকি পুলিশের বিপদ বা ভয় এগুলো আবার কী? তাদের লাইসেন্স আছে!

খালেদ মুহিউদ্দীন

উৎসঃ পূর্বপশ্চিম