সেই আলমের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তিন প্রবাসী

চোখ বড় হয়ে যাওয়া সেই শিশু আব্দুল আলমের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিন যুক্তরাজ্য প্রবাসী। আলমের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন তারা। তারা হলেন, একই উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের সভাপতি শামছুদ্দিন তালুকদার শামস, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোহাব্বত শেখ ও সহ-সাধারণ সম্পাদক হাসিন উজ্জামান নুরু। তাদের পক্ষ থেকে আলমের চোখের চিকিৎসার জন্য পরিবারের কাছে নগদ ৬০ হাজার টাকার চেক তুলে দেয়া হয়।

দীর্ঘদিন যাবৎ অজ্ঞাত এক রোগে ভুগছে বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুৃর ইউনিয়নের মিরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুল আলম। অজ্ঞাত রোগে আলমের চোখ দুটি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। সে হজরত বড়পীর (র.) দাখিল মাদরাসার ৩য় শ্রেণির ছাত্র। চিকিৎসকরা বলছেন তার দুই চোখে অপারেশন করলেই সে সুস্থ হবে। তাই ছেলের চিকিৎসার জন্য মা রাশিয়া বেগম সামাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন।

এ নিয়ে গত শুক্রবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পরদিন তিন যুক্তরাজ্য প্রবাসী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়।

শুক্রবার বিকেলে বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মীরগাঁও গ্রামে আব্দুল আলমের বাড়িতে গিয়ে প্রবাসীদের পক্ষে আলম ও তার বড় ভাই আবুল লেইছের হাতে এ চেক তুলে দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ওয়াহাব আলী, চাউলধনী স্কুল এন্ড কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন ও শফিক আহমদ-পিয়ার।

এসময় তারা আলমের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অপারেশন করানোর জন্য বলেন।

শফিক আহমদ পিয়ার বলেন, আমাদের এলাকায় এমন একটি সংবাদ দেখে ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোহাব্বত শেখকে বলি। তিনি তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করে প্রবাসী তিনজন তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬০ হাজার টাকা আলমের পরিবারকে চিকিৎসার জন্য দেন।

টাকা পাওয়ার পর আলমের মা রাশিয়া বেগম জানান, শুক্রবার আপনি আসলেন আর বিকেলেই কয়েকজন ফেরেশতার মতো লোক এসে আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা দিয়ে গেলেন। যা আমি জীবনে কল্পনাও করতে পারিনি। তাদের এ ঋণ আজীবন মনে থাকবে।

দৌলতপুর ইউনিয়ন এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোহাব্বত শেখ বলেন, জাগোনিউজের এ মানবিক সংবাদটি আমাদের নজরে আসে। বর্তমানে আমি দেশে রয়েছি। আমাদের এলাকার একটি ছেলে এমন জটিল রোগে আক্রান্ত তা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। তিনি আলমের চিকিৎসার পরও খোঁজখবর নেবেন বলে জানান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওয়াহাব আলী বলেন, মানবতার সেবায় এগিয়ে আসা মানুষ আমাদের সমাজে দিন দিন কমে যাচ্ছে। একটি সংবাদের ওপর ভিত্তি করে আব্দুল আলমের সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়ভার নেয়া তিন প্রবাসী এলাকায় মানবিকতার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।