মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি অবতরণের সময় গতি বেড়ে গিয়েছিল। একইসঙ্গে বিমানটি শেষ মুহূর্তে অবতরণে সময় নোজ হুইল রানওয়ে স্পর্শ করে আছড়ে পড়ে রানওয়েতে। বাংলাদেশের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভিস্টিগেশন গ্রুপের (এএআইজি) প্রধান ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এম রহমতউল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এই দুঘটনা তদন্ত করছে মিয়ানমার এয়ারক্রাফট ইনভিস্টিগেশন ব্রাঞ্চ। সংস্থাটির তদন্ত কমিটির সঙ্গে সালাহউদ্দিন এম রহমতউল্লাহও যুক্ত রয়েছেন।
গত ৮ মে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনার তদন্ত করছে মিয়ানমার এয়ারক্রাফট ইনভিস্টিগেশন ব্রাঞ্চ। মিয়ানমারকে তদন্তে সহায়তা করবে এএআইজি। গত ১১ মে মিয়ানমার যান এএআইজি প্রধান ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এম রহমতউল্লাহ। তিনি দেশে ফেরেন ১৪ মে।
ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এম রহমতউল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সেদিন আবহাওয়া খারাপ থাকায় উড়োজাহাজটিকে অ্যাপ্রোচ থেকে গো অ্যারাউন্ড করে দিয়েছিলো কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে। তখন পাইলট উড়োজাহাজটি গো অ্যারাউন্ড করেন। প্রায় ১০ মিনিট উড়োজাহাজটি ক্লিয়ার এরিয়ার মধ্যে ছিল। এরমধ্যে ততক্ষণে বিমানবন্দরে একটি ‘এটিআর’ উড়োজাহাজ অবতরণ করে। তারপর বিমানের উড়োজাহাজটি অ্যাপ্রোচ করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখিছি পাইলট সুন্দরভাবেই অ্যাপ্রোচ করেছেন। ল্যান্ড করার জন্য রানওয়ের কাছাকাছিও এসেছে। যখন রানওয়ের মাঝামাঝি জায়গায় আসছে উড়োজাহাজটি তখন স্পিড বেশ বেড়ে গিয়েছিল। ওই পর্যায়ে এসে জাহাজটি টাচ অ্যান্ড গো-এর মতো করে আবার ওপরে উঠে গেলো। এর কিছুক্ষণের মধ্যে উড়োজাহাজ ২০-৩০ ফিট ওপরে উঠলো, তারপর আবার নিচে নেমে এলো। এরপর রানওয়ের শেষ প্রান্তের ১০০০ ফিটের মধ্যে নোজ ড্রাই দিয়ে নোজ হুইল রানওয়ে স্পর্শ করে বেশ জোরেশোরেই পড়েছে।’
ব্ল্যাক বক্সটি (ককপিট ভয়েস রেকর্ড ও ফ্লাইট ডাটা রেকর্ড) বিশ্লেষণের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হতে পারে জানিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘একমাসের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।’ আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই ফ্লাইটের পাইলট ও কো-পাইলট, উজোজাহাজটির তথ্য নিয়ে ফের ইয়াঙ্গুনে যাবেন সালাউদ্দিন এম রহমতউল্লাহ।
প্রসঙ্গত, ৮ মে বিকাল ৩ টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইয়াঙ্গুনের পথে যাত্রা করে। সন্ধ্যা ৬ টা ২২ মিনিটে দিকে ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে অবতরণকালে বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনায় পড়ে। বিমানটিতে ১জন শিশুসহ ২৯ জন যাত্রী, ২জন পাইলট, ২ জন কেবিন ক্রু ও ২ জন গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। পাইলট, কেবিনক্রুসহ ১৯ জন যাত্রী এতে আহত হন।