বর্ষার মৌসুমে ভুট্টাপোড়া নাশতা হিসেবে দুর্দান্ত। লেবুর রস কিংবা হালকা লবণ-মরিচ দিয়ে ভুট্টাপোড়া খেতে ভারি মজা। ভুট্টা সিদ্ধ অথবা পুড়িয়ে খাওয়া যায়, এ কারণে প্রতিদিন খেলেও এতে ওজন বাড়বে না। ভুট্টাতে ১২৫ থেকে ১৫০ ক্যালরি রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমপদ্ধতি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বর্ষাকালে পেটের নানা ধরনের রোগ হয়। ভুট্টা সেইসব রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
আসুন জেনে নেই ভুট্টা কেন খাওয়া দরকার:-
পুষ্টিগুণে ভরা:- ভুট্টা আঁশে ভরা,যা আপনার পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখে। এতে বায়োফ্লাভোনয়েডস ও ক্যারোটিনয়েডসের মতো প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরকে সুস্থ রাখে।
স্বাস্থ্যস্ম্যত নাশতা:- ভুট্টা সাধারণত রোস্ট বা স্টেম করে খাওয়া যায়। তাই প্রতিদিন খেলেও ওজন বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে দুশ্চিন্তা করা লাগবে না। চাইলে ভুট্টা মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গ্রিল করেও খেতে পারেন।
বর্ষার ফসল:- বর্ষাকালে ভুট্টা পাওয়া যায়। মৌসুমি শস্য হিসেবে ভুট্টা খেতে পারেন। ভিটামিন এ, সি ও লাইকোপিন ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূরে রাখে।
বর্ষাকালের রোগবালাই দূর করে:- বর্ষাকালে শরীরে নানা ধরনের নানান রকমের রোগবালাই দেখা দিতে পারে। গরম-গরম ভুট্টা খেলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। বর্ষার সময় যেসব রোগ ছড়ায়, তা থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে ভুট্টা দারুণ কার্যকর।
হজমে সহায়ক:- ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে।
রুচিবর্ধক:- বর্ষায় ঘরে বা বাইরে সময় কাটাতে ভুট্টা ও চা খেতে পারেন। চায়ের আড্ডা জমতে পারে ভুট্টা দিয়ে।
রক্তসল্পতা দূর করে:- ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ভিটামিন বি১২ বর্তমান, যা নতুন রক্তকোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। এতে রক্তসল্পতা দূর হয়।
বাজে কোলস্টেরল নিয়ন্ত্রক:- এলডিএল নামে শরীরে যে বাজে কোলস্টেরল থাকে, ভুট্টা তা দূর করতে সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে:- ভুট্টার হলুদ দানাগুলোয় ক্যারোটিনয়েডস থাকে, ভুট্টার ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতেও সাহায্য করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়:- ভুট্টা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। তাই ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকেল এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
খনিজের শক্তিশালী উৎস:- ছোট্ট হলুদ ভুট্টার শাঁসে এত বেশি খনিজ থাকে যা আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না! এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও কপার থাকে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসফরাস থাকে যা স্বাস্থ্যকর হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয়। এই খনিজ উপাদানটি শুধুমাত্র হাড়ের ফাটল রোধ করেনা বরং কিডনির স্বাভাবিক কাজ বৃদ্ধি করে।
অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ করে:- বেবি কর্ণে ভালো পরিমাণে আয়রন থাকে। তাই ভুট্টা খেলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং রক্তস্বল্পতা বা অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ করে।
সারা পৃথিবীতে ভুট্টা অনেক জনপ্রিয় একটি শস্য। আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভুট্টা। ভুট্টা শুধুমাত্র বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালোরিই সরবরাহ করেনা বরং ভিটামিন এ, বি, ই এবং অনেক প্রকার খনিজ ও সরবরাহ করে। উচ্চমাত্রায় ফাইবারের উপস্থিতির থাকার কারনে ভুট্টা পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, অর্শরোগ ও কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভুট্টার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টিকারসিনোজেনিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং আলঝেইমার্স রোগ প্রতিরোধ করে।