অকাল গর্ভপাত হতে পারে যেসব কারণে

সন্তান ধারণ এবং জন্মদান সব নারীর জীবনেই কাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়। কিন্তু সন্তান ধারণের পরে কখনো কখনো অকাল গর্ভপাতের মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায় প্রত্যেক মহিলার জন্যই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই সময় অসাবধানতার ফলে ঘটতে পারে এই দুর্ঘটনা। ঠিক কি কারণে এই অকাল গর্ভপাতের মতো দুর্ঘটনা ঘটে চলুন জেনে নেয়া যাক-

জেনেটিক্যাল কারণ: প্রায় ৫০% অকাল গর্ভপাতের মূল কারণ হচ্ছে জিনগত সমস্যা। গর্ভের ভ্রূণটি জিনগত সমস্যা অথবা ক্রোমোজোমের সমস্যার কারণে বেঁচে থাকতে পারে না। তবে এই ধরণের গর্ভপাতের পর পরবর্তী সময়ে মহিলারা সাধারণ ভাবেই গর্ভধারণ করতে পারেন।

ইনফেকশন: গর্ভধারণের প্রাথমিক সময়ে সংক্রমণের সমস্যা দেখা দিলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা দেখা দেয়। সংক্রমণের কারণে নানা ধরণের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং প্যারাসাইট শরীরকে আক্রমণ করে, যার কারণে অকাল গর্ভপাত ঘটে।

হরমোন এবং মাসিকের সমস্যা: গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে মাতৃদেহে নানা ধরণের হরমোনের সৃষ্টি হয়, যার ফলে তার শরীর পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারে এবং দেহে এমব্রায়ো তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে যে সব মহিলাদের মাসিকের সমস্যা এবং পিসিওএস রয়েছে, তাদের অকাল গর্ভপাতের সম্ভাবনা দেখা দেয়।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত কারণ: কিছু মহিলার রক্তে অ্যান্টিবায়োটিকের (জীবাণু-প্রতিরোধী কোষ) মাত্রা বেশি থাকে যা নিজের কোষকেই আক্রমণ করে বসে। এই ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক প্ল্যাসেন্টাকের আক্রমণের ফলে ভ্রুনের রক্তসঞ্চালন পথে বাঁধার সৃষ্টি হয়। ফলে ভ্রূণটি বাঁচানো সম্ভব হয় না।

অ্যানাটোমিক বা শারীরিক কারণ: অনেক মহিলার শরীরের ইউটেরাসে সেপ্টাম অর্থাৎ এক ধরণের দেয়াল থাকে, ডাবল বা হাফ ইউটেরাইন ক্যাভিটি (ক্ষুদ্র জরায়ুজ গহ্বর) থাকে যার কারণেও অকাল গর্ভপাতের সম্ভাবনা দেখা দেয়।

অন্যান্য কারণ: শরীরের জন্য ও ভ্রুণের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ যেমন ড্রাগ, অ্যালকোহল (মদ), ধূমপান এবং অতিরক্ত ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে গর্ভপাত হতে পারে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ভ্রুণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়, একারণেও অকাল গর্ভপাত হয়।