বিলুপ্তির পথে হাতপাখা

হাত পাখা। গ্রামীণ জনপদের অতি পরিচিত একটি নাম। এর কাজ হচ্ছে গরমে বাতাস দেয়া। এটি সাধারণত বঁাশ ও বেত দিয়ে তৈরি করা হয়। এখন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হাত পাখা বিলুপ্তির পথে। পাখার সাথে সাথে কারিগররাও বিলুপ্ত হতে চলেছেন।

কারিগরদের অভিযোগ, পাখার প্রতি মানুষে আগ্রহ কমে গেছে। পাখা তৈরি করে বাজারে ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না। এখন কেউ আর আগের মতো পাখা কিনতে চায় না! তাছাড়া বঁাশও কিনতে হয় দাম চওড়া দামে। ২/৩ বছর পূবের্ বেতের বাঁশ ৫০/৬০ টাকা কিনা গেলেও এখন সেই বঁাশ ২০০/২৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

হাত পাখার কারিগর জমিরুন নেছা জানান, ‘ফাখা খষ্ট খরি বানাইয়া ৪০/৫০ টেখা বেছিয়া ফড়তায় ফড়ে না।’

এক যুগ পূবের্ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় হাত পাখার ব্যাপক প্রচলন ছিল। বতর্মানে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, বৈদ্যুতিক পাখার সুবাদে এর প্রচলন নেই বলেই চলে। বিগত কয়েক বছর পূবের্ ওই পাখার বেশ প্রচলন ছিল গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে। অতিথি কিংবা বিশিষ্টজনের আগমনে সবর্প্রথমই হাত পাখার মাধ্যমেই অতিথিকে স্বাগত জানানো হতো। সেই সময় হাত পাখা ছাড়া কারো দিন চলত না। তবে এখন লোডশেডিং হলে পাখার কদর উপলব্ধি করা যায়। তখন পাখা নিয়েই টানাটানি শুরু হয় পরিবারে প্রত্যেকের মধ্যে। তবে বতর্মানে গরমের সময়ে গরমে তৃপ্তির জন্য আধুনিক বিভিন্ন ধরনের ফ্যান ও এয়ারকন্ডিশনের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে, হাত পাখার কদর কমে গেছে।

উপজেলার পাতিলাসাঙ্গন গ্রামের নুরজাহান বেগম (৯৩) বলেন, তাদের সময়ে গরম নিবারণের একমাত্র মাধ্যম ছিল হাতপাখা। তারা পাখা ব্যতীত বিকল্প কোনো কিছুর চিন্তাই করতে পারেননি। আজ আধুনিকতার ছেঁায়ায় ঘরে ঘরে বৈদ্যুতিক ফ্যান থাকায় সুবাদে হাতপাখা ব্যবহার কমে গেছে। ভবিষ্যতে পাখার ব্যবহার থাকবে কিনা তা বলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।