যে লক্ষণগুলো স্পষ্ট করে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঢুকলেই চোখে পড়ছে বৃষ্টিভেজা এক যুগলের ছবি। বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে ভাইরাল হওয়া ছবি এটি। ছবিটি তুলেছিলেন ফটোগ্রাফার জীবন আহমেদ।
গতকাল সোমবার বিকালে ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ তার ফেসবুক আইডিতে প্রেমিক-যুগলের এই ছবিটি পোষ্ট দেন। সঙ্গে ক্যাপশন দেন, “বর্ষামঙ্গল কাব্য… ভালোবাসা হোক উন্মুক্ত।”
তারপর ইতিহাস! ছবিটা বৃষ্টির পানির মতো উপচে পড়তে থাকে ফেসবুকের হোমপেজে। জীবন আহমেদের আইডি থেকে পোস্ট দেওয়া ছবিতেই একদিন না পেরুতেই ১১ হাজারের উপরে লাইক। প্রায় চার হাজার শেয়ারের পাশাপাশি দেড় হাজার কমেন্ট।
হাজার হাজার মানুষ ছবিটি ডাউনলোড করে পোস্ট দেন নিজ নিজ আইডি থেকে। প্রকাশ্যে চুমু’র ছবিটি নিয়ে একদিকে চলতে থাকে আলোচনা, অন্যদিকে সমালোচনা।
সেই আলোচনা আর সমালোচনার পর আবারও আলোচনায় এসেছেন সেই জীবন আহমেদ। তাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই ছবি তোলার অপরাধে মারধরের শিকার হয়েছেন তিনি- এমনটাই অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, টিএসসির যে স্থানে ছবিটি তোলা হয়েছে সেখানেই প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে জীবন আহমেদকে। লাঞ্ছনাকারীরা সকলেই আলোকচিত্রশিল্পী বলে জানা গেছে। বলা হচ্ছে, একটি ইংরেজি দৈনিকের এক আলোকচিত্র সাংবাদিকও জড়িত এই ঘটনায়।
এমন ঘটনার পর মঙ্গলবার জীবন আহমেদ তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, ‘আজ থেকে সাংবাদিকতা থেকে বিদায় নিলাম।’
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বৃষ্টিভেজা যুগলের চুমু’র ছবি তুলে রাতারাতি আলোচনায় আসা আলোকচিত্রশিল্পী জীবন আহমেদের এমন স্ট্যাটাসে সবাই চমকে যান। তাকে মারধরের ঘটনা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তবে বিকাল পৌনে চারটার দিকে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে সত্যটা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি লিখেছেন, ‘আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হবার ২ ঘন্টা পর ফেরত পেলাম। নিচের এই ষ্ট্যাটাস আমার দেয়া না। কেও বিভ্রান্ত হবেন না। আমার আইডি থেকে বেশ কিছু পোষ্ট ও গায়েব দেখছি। ধন্যবাদ আমার আইটি স্পেশালিষ্ট বন্ধুকে আইডি ফেরত পেতে সহযোগীতা করবার জন্য।’
মারধরের বিষয়টি জীবন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, কার বিরুদ্ধে কথা বলবো? আমার পেশার লোকেরাই আমাকে মেরেছে। আমি কিছুই বলতাম না তারা যদি আমাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে মারধর করতো। কিন্তু তারা আমাকে মেরেছে প্রকাশ্যে টিএসসিতে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে মারার সময় তারা আমাকে বলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নির্দেশেই নাকি মারা হচ্ছে। আমি নাকি কলঙ্কিত করেছি আলোকচিত্রশিল্পী সমাজকে। কিন্তু প্রক্টর স্যার একটু আগে ফোন দিয়ে বললেন, এরকম নির্দেশনা তিনি দেননি, দিতে পারেন না।’
উল্লেখ্য, পূর্ব-পশ্চিম নামে একটি নিউজ পোর্টালের ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছেন জীবন আহমেদ। তিনি এর আগেও বেশ কিছু আলোচিত ছবি তুলেছেন। অভিজিৎ রায়ের রক্তাক্ত ছবিসহ সম্প্রতি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকের সামনে আঙ্গুল নাচিয়ে হুমকি দেওয়ার ছবিও জীবন আহমেদের তোলা।