মাত্র ১১ লাখ টাকায় দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে টয়োটার জ্বালানি সাশ্রয়ী হাইব্রিড কার। মডেল টয়োটা অ্যাকুয়া হাইব্রিড। এটি একটি রিকন্ডিশন কার। এতে হাইব্রিড সিনারজি ড্রাইভিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িটি জ্বালানির পাশাপাশি ব্যাটারিওতেও চলে। ফলে জ্বালানি সাশ্রয় হয়।
পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি ২০১৩ সালের মডেল। এটি ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের মডেলেও পাওয়া যাচ্ছে। মডেলেভেদে এবং গ্রেডভেদে এর দাম ভিন্ন হয়। তবে ২০১৩ সালের মডেল পাওয়া যাচ্ছে ১১ লাখ টাকায়। জাপানে জনপ্রিয় এই মডেলটি বাংলাদেশের বাজারে ও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। নগরের রাস্তায় এই গাড়ির দেখা মেলে। সীমিত আয়ের রোজগেরে নাগরিকে সাশ্রয়ী দামে এই গাড়িটি কিনে নিচ্ছেন।
টয়োটা অ্যাকুয়া হাইব্রিড গাড়িতে আছে ১৪৯৬ সিসির ইঞ্জিন। এতে ৪ সিলিন্ডার ওয়াটার কুলড ডিওএইচসি ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। প্রোট্রেল ই ইলেকট্রিক ড্রাইভেন গাড়িটি ৭২ বিএইচপি শক্তি উৎপাদন করতে পারে। এর ম্যাক্স টর্ক ১১১ এনএম। টপস্পিড ১৮০ কিলোমিটার। ই-সিভিট ট্রান্সমিশন সমৃদ্ধ গাড়িটি ফ্রন্ট হুইল ড্রাইভ।
হ্যাচব্যাক ডিজাইনের এই গাড়িটির ফ্রন্ট হুইলে রয়েছে কয়েল স্পিং স্টাবিলাইজের। রিয়ারে আছে টরশন বিম টাইম কয়েল স্পিং। বেশ কয়েকটি রঙে বাংলাদেশের বাজারে গাড়িটি পাওয়া যাচ্ছে। এর ডিজাইন দুর্দান্ত। ছোট খাটো আকৃতির গাড়িটি ফাইভ সিটার। টয়োটা দাবি করছে গাড়িটিতে ২০ কিলোমিটার মাইলেজ পাওয়া যাবে। লো মেইনট্যান্সের এই গাড়িতে ফুয়েল ট্যাংকের পাশাপাশি ব্যাটারি রয়েছে। গাড়ির ইঞ্জিন চালু থাকা অবস্থায় ব্যাটারি চার্জ হয়।
হাইব্রিড গাড়ি চলার জন্য প্রাথমিক শক্তি হিসেবে হাইব্রিড ব্যাটারি এবং দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়। ব্যাটারির চার্জ যদি শেষ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইঞ্জিন চালু হয়। ব্যাটারির শক্তি গাড়ির জন্য যথেষ্ট না হলে হাইব্রিড ব্যাটারি এবং ইঞ্জিন যৌথভাবে শক্তি উৎপাদন করে এবং গাড়ির চাকাকে গতিশীল রাখে। ব্যাটারি চাকার ঘূর্ণন গতি এবং ইঞ্জিনের পরিত্যক্ত কর্মশক্তি থেকে চার্জ সংগ্রহ করে। এভাবেই হাইব্রিড গাড়ি পরিচালিত হয়।
স্বাভাবিক ভাবে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আপনি হাইব্রিড গাড়ি কেন কিনবেন? এ প্রশ্নের জবাব দিলেন মেভেন অটোস এর স্বত্ত্বাধিকারী মো. আশফাকুর রহমান। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, হাইব্রিড গাড়িতে একই সঙ্গে ফুয়েল এবং ব্যাটারির শক্তি ব্যবহৃত হয়। যা ফুয়েল খরচকে অর্ধেকে নামিয়ে আনে। গাড়ির শক্তি বা কার্যক্ষমতাকে হ্রাস না করে যে সুবিধা হাইব্রিড গাড়ি প্রদান করে তা সাধারণ গাড়ি দিতে পারে না। হাইব্রিড গাড়ির মূল্য সাধারণ গাড়ি থেকে বেশি হলেও গাড়িতে ব্যবহৃত জ্বালানির খরচের সঙ্গে তুলনা করলে হাইব্রিড গাড়ি বেশ সাশ্রয়ী।
কীভাবে হাইব্রিড গাড়ি কাজ করে? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাইব্রিড গাড়িতে জ্বালানি এবং ব্যাটারি শক্তি ব্যবহৃত হয়। ইঞ্জিন যখন জ্বালানিতে চলে, তখন ব্যাটারি ইঞ্জিনের পরিত্যক্ত শক্তি সংগ্রহ করে। আবার চাকা ঘুরলে (যেমন; উইন্ডমিল) যে ঘূর্ণন শক্তি উৎপাদন হয় তা থেকেও ব্যাটারি শক্তি পায়। আর যখনি ব্যাটারি পরিপূর্ণ বা আংশিক চার্জ হচ্ছে তখন ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে ব্যাটারির শক্তিতে গাড়ি চলতে থাকে। মজার ব্যাপার হলো, এই পরিবর্তন গাড়ি নিজে থেকেই করে। এজন্য আলাদা কোন সুইচ চাপতে হয় না। গাড়ি নিজের প্রয়োজনে ব্যাটারি বা ফুয়েলকে জ্বালানি শক্তি হিসেবে ব্যবহার করে।
হাইব্রিড গাড়ি যেহেতু অটোমোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকেই প্রস্তুত হয়ে আসে, সেহেতু পৃথিবীর নামকরা গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বুঝে শুনেই এসব গাড়ি নির্মাণ করে। তাই এ গাড়ি সিএনজিতে রুপান্তর করা গাড়ির চেয়েও অনেক নিরাপদ এবং কার্যকরী।