দামে সাশ্রয়ী। মানে সেরা। অসংখ্য কালার ও ডিজাইন। হাতের কাছে সহজ বিক্রয়োত্তর সেবা। উচ্চ প্রযুক্তিতে দেশেই তৈরি। এসব কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রাহকদের মন জয় করেছে দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেল। মার্সেল ব্র্যান্ডের প্রধান পণ্য বলা চলে রেফ্রিজারেটর। কোরবানীর ঈদের সময়টা বাংলাদেশে ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম। ঈদ সামনে রেখে এবার ৬৬ মডেলের ফ্রিজ প্রদর্শন ও বিক্রি করছে মার্সেল।
জানা গেছে, ঈদকে টার্গেট করে আগামি এক মাসে ১ লাখ ফ্রিজ বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছে মার্সেল। পাশাপাশি একই সময়ে গত বছরের চেয়ে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ বেশি টেলিভিশন, এয়ারকন্ডিশনার ও হোম অ্যাপ্লাপয়েন্সেস বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্রমতে, এবারের রোজায় স্থানীয় বাজারে সাশ্রয়ী দামে উচ্চ গুণগতমানের ফ্রিজ, এসি, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেসের দুই শতাধিক মডেলের পণ্য ছেড়েছিল মার্সেল। ফলে, রোজায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। বিক্রি বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবার টার্গেট করা হয়েছে ঈদুল আযহা বা কোরবানি ঈদকে।
বিক্রেতারা জানান, কোরবানীর গোসত সংরক্ষনের জন্য ঈদুল আযহায় ফ্রিজের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। সারা বছরের মোট ফ্রিজের অর্ধেকই বিক্রি হয় এই সময়ে। কোরবানিতে ফ্রিজের এই বাড়তি চাহিদা পূরণে প্রস্তুত দেশীয় প্রতিষ্ঠান মার্সেল।
‘ঈদ আনন্দে মাতামাতি, মার্সেল দিচ্ছে নতুন গাড়ি’ এই স্লোগান নিয়ে চলতি মাস থেকে সারা দেশে ঈদ মেগা ডিজিটাল ক্যাম্পেইন শুরু করেছে মার্সেল। এর আওতায় প্রতিবার মার্সেল ফ্রিজ, টিভি ও এসি কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পেতে পারেন নতুন গাড়ি। পেতে পারেন ফ্রিজ, টিভি, এসিও। রয়েছে নিশ্চিত ক্যাশব্যাকের সুযোগ। আর এসব সুবিধা থাকছে ঈদুল আযহা বা কোরবানি ঈদ পর্যন্ত।
মার্সেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সাশ্রয়ী দামে সেরা মানের পণ্য পাওয়ায় মার্সেল পণ্যের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা দ্রুত বাড়ছে। ব্যাপক চাহিদার প্রেক্ষিতে কারাখানায় উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। প্রোডাক্ট লাইনে যুক্ত করা হয়েছে নতুন মডেলের পণ্য। ডিজাইন ও কালারে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। সেলস পয়েন্টগুলোতে গড়ে তোলা হয়েছে ফ্রিজ, টিভি, এসিসহ অন্যান্য হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেসের পর্যাপ্ত মজুদ।
মার্সেলের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে স্থানীয় বাজারে ৬৬ মডেলের ফ্রিজ উৎপাদান ও বাজারজাত করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে এর মধ্যে রয়েছে ৫২ মডেলের ফ্রস্ট, ২ মডেলের নন-ফ্রস্ট ও ১২ মডেলের ডিপ ফ্রিজ।
ফ্রস্ট ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে টেম্পারড গ্লাসডোরের ১১টি মডেল। রয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বিএসটিআই’র ‘ফাইভ স্টার এনার্জি রেটিং’ সনদ প্রাপ্ত রেফ্রিজারেটর। নন-ফ্রস্ট ফ্রিজের রয়েছে দুটি মডেল। এসব ফ্রিজে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনর্ভাটার প্রযু্িক্তর কম্প্রেসার ব্যবহার করা হয়েছে। কম্প্রেসারে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট। ফলে, মার্সেলের ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রিজে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। কোরবানি ঈদে ডিপ ফ্রিজের চাহিদা মেটাতে মার্সেলের রয়েছে ১২ মডেলের ফ্রিজার।
জানা গেছে, মার্সেলের ২১৭ লিটারের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ বাজারে ভালো সাড়া ফেলেছে। বিশেষ ডিজাইনে তৈরি বড় ডিপযুক্ত ২১৩ লিটার ও ২২০ লিটারের ফ্রস্ট ফ্রিজও ভালো চলছে। এর ডিপ অংশ বড় হওয়ায় গ্রাহকদের আলাদা করে ডিপ ফ্রিজ কিনতে হবে না। তাই, গ্রাহক পর্যায়ে এই ফ্রিজের চাহিদা অনেক বেশি। এছাড়া বাজারে নতুন এসেছে মার্সেলের স্পেশাল টেম্পারড গ্লাস ডোরের রেফ্রিজারেটর ও ৩০০ লিটারের ডিপ ফ্রিজ।
ফ্রিজের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ১৯, ২০, ২৪, ২৮, ৩২, ৩৯, ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির সর্বমোট ৪৩ মডেলের এলইডি টেলিভিশন উৎপাদন ও বাজারজাত করছে মার্সেল। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিকমানের ৩২-ইঞ্চি স্মার্ট টিভি।
এদিকে চলতি বছর গরমের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মার্সেল এসির বিক্রি। স্থানীয় বাজারে মার্সেলের রয়েছে ১১ মডেলের এসি। এর মধ্যে রয়েছে ১২,০০০ বিটিইউ বা ১ টনের এসি, ১৮,০০০ বিটিইউ বা ১.৫ টনের ধূলা-ময়লা ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত আয়োনাইজার ও ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি। ধূলা-ময়লা ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত বাতাস প্রবাহিত হয় বলে ইতোমধ্যে আয়োনাইজার প্রযুক্তির ১.৫ ও ২ টনের এসি বেশি চলছে।
মার্সেল বিপণন বিভাগের প্রধান ড. মো. সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে ৩৫ শতাংশ বেশী ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে মার্সেলের। একই সময়ে টেলিভিশন ও এসি বিক্রি বেড়েছে যথাক্রমে ৪০ ও ৬৫ শতাংশ। বেড়েছে হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেসেরও বিক্রি। গড়ে পণ্য বিক্রি বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। তাই, এবার কোরবানী ঈদে এক লাখ ফ্রিজ বিক্রির পাশাপাশি গত কোরবানির চেয়ে ৪০ শতাংশের বেশি পণ্য বিক্রির টার্গেট নেয়া হয়েছে।
সূত্রমতে, মার্সেল ফ্রিজে গ্রাহকরা পাচ্ছেন এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। মার্সেল ফ্রিজের কম্প্রেসারে সর্বোচ্চ ১০ বছরের ওয়ারেন্টিসহ ৫ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সুবিধা রয়েছে । এসি ও টিভিতে আছে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। ইনভার্টার প্রযুক্তির এসির কম্প্রেসারে রয়েছে ৮ বছরের গ্যারান্টি। মার্সেল টিভিতে আছে দুই বছরের প্যানেল ও স্পেয়ার পার্টস ওয়ারেন্টিসহ পাঁচ বছরের ফ্রি সার্ভিসের সুবিধা।
আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের আওতায় দেশব্যাপী ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টার থেকে বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়া হচ্ছে। আছে হোম সার্ভিস। গ্রাহকরা যেকোন মোবাইল থেকে ১৬২৬৭ নম্বরে কল করে ৩৬৫ দিনই পাচ্ছেন কাঙ্খিত সেবা। তথ্য প্রাপ্তির পর গ্রাহকের বাড়িতে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে সার্ভিস প্রোভাইডার। মার্সেলের এই সেবা এরইমধ্যে ব্যাপক প্রসংশিত হয়েছে। খুব শিগগীরই অনলাইন বিক্রিয়োত্তর সেবা চালু হচ্ছে। ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনের ফলে গ্রাহককে ওয়ারেন্টি কার্ড বহনেরও দরকার নেই। মার্সেল সার্ভারেই সব সংরক্ষিত থাকছে।