নতুন করদাতার সন্ধানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবার সরাসরি তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহের (সেকেন্ডারি ডাটা) প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রথমবারের মত উপজেলা পর্যায়েও আভ্যন্তরীণ জরিপ বা সেকেন্ডারি ডাটার মাধ্যমে নতুন করদাতা খুঁজতে শুরু করেছে রাজস্ব প্রশাসন।
সাধারণত এনবিআরের কর্মকর্তারা বাড়ি বাড়ি বা অফিস আদালতে গিয়ে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। এর মাধ্যমে নতুন করদাতা খুঁজে বের করা হয়। তবে এবার অর্থবছরের শুরুতে সরাসরি তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সেকেন্ডারি ডাটা ব্যবহার করে করযোগ্য ব্যক্তির তথ্য নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে এনবিআরের সদস্য ড. মাহবুবুর রহমান (কর জরিপ) বলেন, ‘নতুন করদাতার সন্ধানে এবার আমরা অর্থবছরের প্রথম থেকে কাজ শুরু করেছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা তথ্য নিচ্ছি। এর মাধ্যমে যারা করযোগ্য বা সামর্থ্যবান অথচ কর দিচ্ছেন না বা কর শনাক্তকরণ নম্বর (ইটিআইএন) নেই তাদের খুঁজে বের করা সহজ হয়েছে।’
তিনি জানান, সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা থেকে যারা ট্রেড লাইসেন্স নিচ্ছেন, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রথমবারের মত উপজেলা পর্যায়ে পৌরসভা থেকে সেকেন্ডারি ডাটা ব্যবহার করে করযোগ্য ব্যক্তির তথ্য নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে বিদেশী নাগরিকদের তথ্য,বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে গাড়ি ক্রয়কারীদের তথ্য, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমি কেনাবেচার তথ্য এবং বিদ্যুৎ বিতরণ অফিসসহ অন্যান্য পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থা থেকে করযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য নেওয়া হচ্ছে।
মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন শহরে যারা বাড়ি তৈরি করবেন বা ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য গৃহায়ন কর্তৃপক্ষসমূহের নিকট থেকে অনুমোদন নিয়েছেন,সেসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।এভাবে সেকেন্ডারি ডাটা ব্যবহার করে নতুন করদাতা খোঁজা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই জরিপের মাধ্যমে কোন সামর্থ্যবান ব্যক্তি কর দিচ্ছেন না-তা আমরা জানতে পারছি। আশা করি-এর মাধ্যমে যেসব বিত্তশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন কর না দিয়ে রাষ্ট্রকে বঞ্চিত করছেন, তাদেরকে করের আওতায় আনা যাবে।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে প্রায় ৩৬ লাখ ই-টিআইএনধারী রয়েছেন। করজালের আওতা বাড়াতে ২০২১ সালের মধ্যে টিআইএনধারীর সংখ্যা ৫০ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের।