‘আপনার রেট কত?’

গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে মুহুর্মুহু ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে। ফেসবুকের দেয়াল আর ইনবক্স ভেসে যাচ্ছে কুৎসিত মন্তব্যে। ব্যক্তিগত ভাবে এ বিষয় নিয়ে আমি মোটেও উদ্বিগ্ন নই। কারণ এই আক্রমণ আমার জন্য নতুন কিছু নয়। অতীতেও আমি এইসব মোকাবিলা করেছি, এখনো করছি আর ভবিষ্যতেও মোকাবেলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি।

আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা শাহবাগ আন্দোলনের সময় থেকেই আমার কমেন্ট অপশন বন্ধ রাখার কথা বলছেন। সেসময় আমার চরিত্র হননের নানান পর্যায় আমাকে মোকাবেলা করতে হয়। এমনকি আমার ফোন নাম্বার গণহারে পর্ণ সাইটে আপলোড করা হয়েছিল। হাজার হাজার ফোন কলের অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এসেছিল একটাই প্রশ্ন:

আপনার রেট কত?

সেসময়েও আমি আমার এই নাম্বার পরিবর্তন করিনি। শুধুমাত্র সেই বিরুদ্ধ পরিবেশ মোকাবেলা করে আমার রাজনৈতিক কর্তব্য এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করে গেছি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার পর্যালোচনা হচ্ছে আন্দোলন সংগ্রামে আন্দোলনকারীদের নানাভাবেই নাজেহাল করা হয়। আন্দোলনকারী যদি নারী হন তাহলে তো কথাই নেই। তার চরিত্র হনন করাটা একটা আন্দোলন দমানোর হাতিয়ার হয়। একজন নারী আন্দোলন সংগ্রাম করতে আসলে তাকে দ্বিগুণ প্রস্তুতি নিয়ে লড়াই করতে হয়।

আমিসহ যেসকল নারীরা প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ধরণের উন্মত্ত আক্রমণের স্বীকার হয়েছেন তাদেরকে আমি অভিবাদন জানাই। এই সমাজ এবং রাষ্ট্রের ধর্ষকামী চরিত্র আক্রমণকারীরা নিজেরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রমাণ দিচ্ছেন। তাদের খোলশ নিজেরাই উন্মুক্ত করছেন। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আরো হাজার হাজার নারীকে সামাজিক মাধ্যম আর রাজপথে থেকেই এর মোকাবেলা করতে হবে।

এই ধরণের ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে মুক্তির উপায় কী? উত্তর: লড়াই!

কোটা সংস্কার চাই।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)