থাইল্যান্ডের গুহায় আটকেপড়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচের সঙ্গে তিন দিন ছিলেন ড. রিচার্ড হ্যারিস নামে এক চিকিৎসক। খবর বিবিসি বাংলার।
রিচার্ড হ্যারিস অস্ট্রেলিয়ার একজন চিকিৎসক। তিনি থাইল্যান্ডে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এরই মধ্যে তিনি খবর পেলেন যে, দেশটির উত্তরাঞ্চলে একটি পাহাড়ের গুহার ভেতরে আটকা পড়েছে ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচ।
প্রথম এক সপ্তাহ ওই শিশুদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জানা গেল তারা থাম লুয়াং নামে একটি গুহার গভীরে আটকা পড়ে আছে।
তাদের আটকে পড়ার খবর শোনার পর ড. হ্যারিস থাইল্যান্ডে তার ছুটি বাতিল করে কিশোরদের উদ্ধারে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দেন।
ওয়াইল্ড বোয়ার ফুটবল দলের কিশোর সদস্যদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখতে চিকিৎসক রিচার্ড হ্যারিস গুহার ভেতরে যান। তিনি তখন সেখান থেকে বেরিয়ে না এসে শিশুদের সঙ্গে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর গুহার ভেতরে তিন দিন ছিলেন তিনি।
শিশুদের সবাইকে যে গুহার ভেতর থেকে সফলভাবে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে তার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ড. হ্যারিসের। প্রথমে যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছেলেদেরকে বের করে আনা হয়েছিল সেটা হয়েছিল তারই নির্দেশনায়।
তারপর তিন দিন ধরে জটিল ও বিপজ্জনক এক অভিযান চালিয়ে একে একে সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে।
ড. হ্যারিস সবার কাছে হ্যারি নামে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে, গুহার ভেতর থেকে যেসব উদ্ধারকারী সবার শেষে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি তাদের একজন।
সব শিশুদের যখন গুহার ভেতর থেকে নিরাপদে বের করে আনা হলো তখন সেই আনন্দে যোগ দিতে পারেননি ড. হ্যারিস। কারণ উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই এই চিকিৎসক খবর পান যে তার বাবা মারা গেছেন।
ড. হ্যারিসকে খুঁজে বের করেছিল ব্রিটিশ ডুবুরিরা। তারপরই তাকে এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার সরকার বলছে, থাই সরকারের খুব উচ্চপর্যায় থেকে তাকে এই অনুরোধ করা হয়েছিল।
উদ্ধার তৎপরতায় নেতৃত্বদানকারী থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই রাজ্যের গভর্নর নারংসাক ওসোতানাকর্ণ অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ানরা খুব সাহায্য করেছে। বিশেষ করে ডাক্তার হ্যারিস।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ড. হ্যারিস প্রশংসায় ভাসছেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অনেকে। কেউ কেউ তাকে ‘বছরের সেরা অস্ট্রেলিয়ান’ হিসেবে ঘোষণা করারও অনুরোধ করেছেন।