কাঁঠালের গন্ধ নিতে পারেন না এমন অনেকেই আছেন। তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন, যারা আবার কাঁঠালের বিচি খেতে খুব পছন্দ করেন। অনেকেই হয়তো জানেন না, কাঁঠালের বিচিতে বেশি কিছু পুষ্টিকর উপাদান উপস্থিত যা দেহে শক্তির ঘাটতি দূর করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া ত্বককে সুন্দর করে তোলার পাশাপাশি শরীরকে সার্বিকভাবে চাঙ্গা করে তোলে।
চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক কাঁঠালের বিচির আটটি বিশেষ গুণ…
কাঁঠালের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার উপস্থিত যা শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের প্রকোপ প্রতিরোধ করে। সেই সঙ্গে কোলোনের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। তাই যাদের প্রতিদিন সকালে বেজায় কষ্ট পোহাতে হয়, তাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কাঁঠালের বিচি অন্তর্ভুক্ত করা জুরুরি।
প্রোটিনের ঘাটতি মেটায়
শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে নিয়মিত কাঁঠালের বিচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁঠালের বিচিতে উপস্থিত প্রোটিন দেহের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পেশী গঠনের কাজ করে। এছাড়া মেটাবলিজম রেট বাড়াতেও এর কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে
বর্ষাকালে নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে কাঁঠালের বিচি নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এতে উপস্থিত একাধিক অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এলিমেন্ট জীবাণুদের দূরে রাখার মধ্য দিয়ে নানাবিধ খাদ্য ও পানি জাতীয় রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এছাড়া অল্প সময়ে ফর্সা ত্বক পেতে কাঁঠালের বিচির পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।
হজমশক্তি বাজায়
পরিমাণ মতো কাঁঠালের বিচি নিয়ে প্রথমে কিছুটা সময় রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর সেগুলো বেটে নিয়ে গুঁড়ো করে ফেলুন। এই গুঁড়ো পাউডারটি খেলে নিমেষে বদ-হজম ও গ্যাসের মতো সমস্যা কমে যায়।
মানসিক চাপ কমায়
কাঁঠালের বিচি মানসিক চাপ কমাতে সক্ষম। আসলে এতে প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন ও অন্যান্য উপকারি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস যেমন- জিঙ্ক, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কপার, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম উপস্থিত, যা মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য ঠিক রাখার মধ্য দিয়ে স্ট্রেস কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
কাঁঠালের বিচিতে উপস্থিত ভিটামিন এ, দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি একাধিক চোখ সম্পর্কিত সমস্যাকে দূরে করে।
ত্বকের বয়স কমে
খাতায় কলমে বয়স বাড়ালেও ত্বককে যদি আজীবন তরতাজা ও সুন্দর রাখতে চান, তাহলে আজ থেকেই ব্যবহার শুরু করুন কাঁঠালের বিচি। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো বিচি নিয়ে প্রথমে গুঁড়ো করে নিন। তারপর সেটি অল্প পরিমাণ দুধের সঙ্গে মিশে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এই পেস্টটি প্রতিদিন মুখে লাগালে দারুন উপকার পাওয়া যায়। চাইলে সামান্য মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য আরও বৃদ্ধি পায়।
রক্তশূন্যতার প্রকোপ কমে
অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত রোগীর মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। গবেষণায় দেখা গেছে, এই রোগের বিষয়ে সচেতনতার অভাব, ঠিক মতো খেতে না পাওয়া দায়ী। কাঁঠালের বিচিতে প্রচুর মাত্রায় আয়রন উপস্থিত, যা খুব অল্প দিনেই রক্তাস্বল্পতার মতো কঠিন সমস্যা দূর করতে পারে।