এইচআইভি ভাইরাসের কার্যকর প্রতিষেধক হতে পারে এমন ওষুধ তৈরির সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকরা। সম্প্রতি আবিষ্কৃত এক চিকিৎসাপদ্ধতি এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে কালজয়ী ফলাফল হিসেবে দেখা হচ্ছে। গবেষকরা মনে করছেন। এই চিকিৎসার মাধ্যমে মানবদেহে এইচআইভি ভাইরাসের বিভিন্ন প্রজাতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করা সম্ভব।
৩৯৩ জন মানুষের ওপরে এই পরীক্ষা চালানোর পর তাদের দেহে এইচআইভি প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, এমন তথ্য উঠে এসেছে ল্যানসেট এর একটি গবেষণায়। এইচআইভি সদৃশ একটি ভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকটি বানরও এই চিকিৎসায় নিরাময় লাভ করেছে।
‘প্রেপ’ বা ‘প্রি এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস’ নামের একটি ওষুধ এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিয়মিত গ্রহণ করলে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে না।
কেননা, এইচআইভি ভাইরাস একবার মানবদেহে প্রবেশ করার পর দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাথে মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকতে পারে। যার দরুন এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরি করা প্রায় অসম্ভব ছিল এতদিন।
কিন্তু এই ‘মোজাইক’ প্রতিষেধক এইচআইভি’র বিভিন্ন ধরণের প্রজাতির সংক্রমণ রোধে কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সুস্থ মানুষের মধ্যে এই প্রতিষেধকের গবেষণা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র, রুয়ান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, উগান্ডা আর থাইল্যান্ডের ঐ অধিবাসীরা ৪৮ সপ্তাহের মধ্যে ৪টি প্রতিষেধক গ্রহণ করেন।
গবেষণায়, নির্দিষ্ট সময় শেষে প্রত্যেকের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাতেই এইচআইভি প্রতিরোধক তৈরি হয় এবং প্রতিষেধক নিরাপদ হিসেবে প্রমাণিত হয়। তবে এই গবেষণার শীর্ষ গবেষক ও হার্ভার্ড মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড্যান বারোখ বলেন এই গবেষণার ফল সতর্কতার সাথে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।
বারোখ জানান প্রতিষেধকের মাধ্যমে সবার দেহে এইচআইভি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলেও এই ভাইরাসের আক্রমণ ও সংক্রমণ রোধে এই প্রতিষেধক যথেষ্ট কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর আনুমানিক ১৮ লক্ষ নতুন এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এইচআইভি’র চিকিৎসায় নানাবিধ অগ্রগতি হলেও এই ভাইরাসের নিশ্চিত প্রতিষেধক এখনও মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে।