বাসর রাতে গায়ে হাত দিতে নিষেধ করে স্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি তার খালুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত। আর এ কথা জানেন খালাও। তারা সবাই মিলে গ্রুপ সেক্স করেন। তাই তাদের সঙ্গে গ্রুপ সেক্স করতে রাজি হলে তবেই স্বামীকে কাছে আসতে দেবেন তিনি। নচেৎ নয়। এই মর্মে ভারতে থানায় ও আদালতে অভিযোগ দায়ের করলেন এক যুবক।
তার দাবি, এ-সংক্রান্ত ভিডিও এবং সব তথ্যপ্রমাণ তার কাছে রয়েছে। কিন্তু, অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শুধু তাই নয়, যুবকের আরও অভিযোগ, থানায় অভিযোগ জানানোর পর থেকে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন তার স্ত্রীর খালু।
অভিযোগকারী যুবকের নাম পিন্টু মাঝি। বাড়ি গাজোল থানার আলাল গ্রামে। বয়স ২৮। তিনি ভারতীয় রেলের চতুর্থ শ্রেণির স্থায়ী কর্মী। চাকরি পাওয়ার পর তিনি গত ২২ এপ্রিল পুরাতন মালদার মোকাতিপুরের বাসিন্দা বাণী রায়কে (নাম পরিবর্তিত) বিয়ে করেন। দেখাশোনা করেই সেই বিয়ে হয়েছিল। বাণীর বাবা পেশায় গাড়িচালক। তার আর্থিক সঙ্গতি খুব ভালো না থাকায় বাণীর পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তার এক খালু। নাম সুমিত স্বর্ণকার (নাম পরিবর্তিত)। বাণী একটি কলেজ থেকে সংস্কৃত অনার্সে ফাইনাল পরীক্ষা দিলেও পাস করতে পারেননি।
পিন্টু মাঝির অভিযোগ, ২২ এপ্রিল বিয়ে হয় তাদের। ফুলশয্যার রাতে স্ত্রী তাকে কাছে আসতে দেননি। তখনই তিনি গোটা বিষয়টি জানতে পারেন। তার স্ত্রী তাকে জানান, খালুর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। সে কথা জানা রয়েছে তার খালারও। তার শরীর একমাত্র খালু ছুঁতে পারেন। তবে পিন্টু যদি গ্রুপ সেক্সে রাজি থাকেন, তবে তিনি তার শরীরে হাত দিতে পারেন। নতুন স্ত্রীর মুখে এই কথা শুনে মাথায় বাজ পড়ে পিন্টুর। পরদিন তিনি ঘটনাটি জানান শ্বশুর মশাইকে। কিন্তু তার অভিযোগ, শ্বশুর মশাই সব ঘটনা শুনেও কোনো কথা বলেননি। ২৫ এপ্রিল তিনি স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যান। অভিযোগ, সেখান থেকে খালুর সঙ্গে পালিয়ে যান তার স্ত্রী। সেই থেকে আজ পর্যন্ত স্ত্রী তার বাড়িতে যাননি।
এদিকে, কয়েক দিন পর বাণী স্বামী পিন্টুর বিরুদ্ধে গাজোল থানায় বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। সেই খবর পেয়ে পিন্টুও গাজোল থানায় গোটা বিষয়টি জানিয়ে অভিযোগ জানাতে যান। কিন্তু, পুলিশ তাকে বলে, নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে। পিন্টুর দাবি, তিনি সেই চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখন তার স্ত্রীর খালা ও খালুও তাকে গ্রুপ সেক্সে শামিল হতে অফারও দেন। তবে সেই প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। অবশেষে গত ২৭ মে তিনি গোটা ঘটনা জানিয়ে গাজোল থানায় রেজিস্টার্ড পোস্টে একটি অভিযোগপত্র পাঠান। কিন্তু থানা তা গ্রহণ করেনি। ওই একই দিনে অভিযোগপত্র পাঠান পুলিশ সুপারের অফিসেও। সেটি অবশ্য গৃহীত হয়।
অভিযোগ, এরপর থেকেই তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন তার স্ত্রীর খালু সুমিত স্বর্ণকার। তিনি নাকি এও বলেন, তাকে মেরে ফেললে তার চাকরির দাবিদার হবেন তার স্ত্রী। গত ২ আগস্ট তিনি ফের গাজোল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগ, পুলিশ তার অভিযোগ নিলেও কোনো নথি বা নম্বর দেয়নি। পিন্টু মাঝি আরও জানান, থানার সদিচ্ছা না দেখে তিনি অবশ্য আগেই গত ১৪ মে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। তার আরও অভিযোগ, পুলিশ এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পিন্টুর দাবি, নিজের বক্তব্যের সপক্ষে সমস্ত প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। তিনি প্রয়োজনে সেই প্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারেন।
পিন্টুর আইনজীবী শোভন দাশগুপ্ত বলেন, এটি বধূ নির্যাতন নয়, পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা। গোটা ঘটনায় গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ সুপারকেও ঘটনাটি জানানো হয়েছে। কিন্তু, কোনো কাজ না হওয়ায় ১৫৬ (৩ সি) সিপিআরসি ধারায় ঘটনাটি জানিয়ে জেলা আদালতের মুখ্য দায়রা বিচারকের কাছে মামলা দায়ের করা হয়। বিচারক এই মামলা মঞ্জুর করেছেন। বাণী এখনও তার খালুর সঙ্গেই রয়েছেন। তিনি পিন্টুর সঙ্গে সংসার করতে রাজি নন।