মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাবার অপরিহার্য উপাদান। ভাত,মাছ, দিম,দুধ ও বিভিন্ন রকম ফল ও শাকসবজি মানুষ খেয়ে বেঁচে থাকে। এই খাবার বিভিন্ন স্বাদ ও রঙের হয়ে থাকে।
আবার কোন কোন খাবার চিবিয়ে খান, চেটে খান। চুষে খান, গিলে খান। যেমন খাবারই খান, ভেবে দেখেছেন কখনও, নীল রঙের কোনও খাবার আপনি কখনও খাননি? কি মনে পড়েছে নাকি সেরকম কোন খাবার? না, খাননি।
শুধু আপনিই নন, পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই খাননি। কারণ, নীল রঙের কোন প্রাকৃতিক খাবার হয় না বললেই চলে। আমরা যে বেগুন খাই, তার রং নীল নয়, বেগুনি। জামের মতো ফলের রংও নীল নয় মোটেই। বিদেশেও ব্লু-বেরির মতো একটি-দুটি খাবার বাদে স্বাভাবিক নিয়মে তৈরি নীল রঙের কোন খাদ্যোপযোগী বস্তু পাওয়া যায় না। কিন্তু কেন? লাল, হলুদ, গেরুয়া (জর্দা রঙ), সবুজ, সাদা, কালো— এত রঙের খাবার হয়, নীল খাবার হয় না কেন?
যদি একটু ভেবে দেখা যায়, তাহলে বিষের রং নীল। বিজ্ঞানের জটিল তত্ত্ব বলছে, এর নেপথ্যে রয়েছে অভিযোজনের কারণ। গাছের খাদ্য তৈরি করা, অর্থাৎ সালোকসংশ্লেষের জন্য অন্যতম আদর্শ হল নীল আলো। কাজেই দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোজিত হয়ে গাছের ভেতরে থাকা রঞ্জক নীল আলো শোষণ করে নেয় সবচেয়ে বেশী। একই সঙ্গে, গাছে নীল রং আসে যে ‘অ্যান্থোসায়ানিন’ রঞ্জকের থেকে, সালোকসংশ্লেষণে তার ভূমিকা সবচেয়ে কম। কাজেই অভিযোজনের ফলে সেই রঞ্জকের উপস্থিতিও পৃথিবীর উদ্ভিদকুলের মধ্যে ক্রমশ কমেছে।
সে কারণেই শুধু ফল নয়, নীল ফুলও এত কম। এমনকী, প্রাণীর দেহে নীলের ছোঁয়াও অত্যন্ত কম। সারা পৃথিবীতে যেটুকু খাবার নীল রঙের দেখা যায়, তা-ও প্রধানত কৃত্রিম খাবার। বানানো। প্রাকৃতিক নিয়মে সৃষ্টি হওয়া নয়। তাই আপনার লাঞ্চ-ডিনারেও নীল খাবার থাকার চান্স ‘Nil’ বললেই চলে।