স্বামী স্ত্রীর মাঝে বয়সের তারতম্য, কিন্তু কেন?

ঘটক এসে পাত্রীর খবর দিয়ে গেল। সৈয়দ সাহেব তার বেয়াইকে নিয়ে পাত্রীর বাড়িতে গেলেন। তার একমাত্র ছেলের জন্য প্রথম দেখাটা সেরে আসতে চায় সৈয়দ সাহেব। কনে দেখে ফিরে আসার সময় বেয়াইকে জিজ্ঞেস করল।

সবইতো ঠিক, কিন্তু মেয়ের বয়সটা একটু বেশি মনে হলো। ২/৩ কমিয়ে বললেও আমার ছেলে বয়সের সমান। আজকালতো হর হামেশাই কাছাকাছি বয়সে বিয়ে হচ্ছে। এমনকি পাত্রী বয়সে বড়/কম বয়সী বেয়াই উত্তর দিল।

কী যে বলেন বেয়াই? আমাদের বেয়ান এবং আপনার বেয়ানতো কমপক্ষে ৫/৭ বছরের ছোট। না না আমাদের জোয়ান ছেলের জন্য কম বয়সীই মেয়েই খুঁজতে হবে।

স্বামী-স্ত্রীদের মধ্যে এমন বয়সের পার্থক্যটার চিন্তাধারা চলে আসছে যুগযুগ ধরে। ঠিক যেমন দম্পতিদের মাঝে স্ত্রী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খাটো হয়। সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আচার যুগযুগ ধরে যেভাবে চলে আসছে আমরা তারই প্রতিফলন এখনো দেখি। সেই আদিকালেও বৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনা যে ছিল না তেমন নয়।

বর্তমান পরিসংখ্যান মতে নারীরা পুরুষের চাইতে বেশিদিন বাঁচে। সুতরাং স্ত্রীর বয়স যদি ৫/৬ বছর বেশি হয় তাহলে কাছাকাছি বয়সে দুজনই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাহলে কাউকে বিধবা জীবন কাটাতে হবে না।

তবে স্ত্রীদের বয়স কম হওয়ার কারণ বেশ কয়েকটা আছে বৈকি?

১. নারীদের প্রজনন ক্ষমতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়। ৬০ বছরের নারী সন্তান জন্ম দিতে পারে না । কিন্তু ষাট বছরের বৃদ্ধ পুরুষ অবশ্যই এবং অনায়াসে পিতা হতে পারে। প্রজন্ম তৈরি করাই তো মানব সভ্যতার মূল কথা। অনেক আগে বেশি সংখ্যায় সন্তানাদির প্রয়োজন ছিল– শিশু মৃত্যুহার অনেক বেশি ছিল, সেইজন্যে।

২. স্বামীরা স্ত্রীদের বশে রাখার কৌশল হিসেবেই কমবয়সীদের বিয়ে করতো। আগের দিনের দম্পতিদের দেখুন। স্ত্রীরা টু শব্দটিও করতো না, আর তাই বিবাহ বিচ্ছেদও কম ছিল। সেই সঙ্গে বৃদ্ধবয়সে স্বামীকে যত্ন আত্তি করতে পারবে কম বয়সী স্ত্রী। অবশ্য যৌনক্ষমতা তুলনামূলক নারীদের আগেভাগেই ফুঁড়িয়ে যায়। বিষয়টা অবশ্যই প্রকৃতিগত।

তা ছাড়াও মেয়েরা তুলনামূলক কমবয়সেই পরিপক্ষ হয়ে পড়ে। মেয়েদের শারীরিকভাবে সেকেন্ডারী প্রক্রিয়াগুলো একটু আগেভাগেই শুরু হয়ে যায়। সুতরাং শারীরিক এবং মানসিকভাবে তারা প্রজন্মগত দায়িত্ব নিতে অল্প বয়সেই প্রস্তুত হয়ে পড়ে।

তবে ব্যতিক্রম ক্রমশই বাড়ছে। সেলিব্রেটিদের মধ্যে অনেক দৃষ্টান্ত দেখা যায়। প্রখ্যাত ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার বিয়ে করেছেন তার থেকে ৫ বছর বড় অন্জলিকে। সাইফ আলী খানও ১৩ বছরের বড় অমৃতা সিংকে প্রথম বিয়ে করেছিলেন। বলিউডে অনেক উদাহরণ আছে।