সিলেট জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে সততার পুরস্কার পেয়েছেন নগরীর জিন্দাবাজারে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া ৮৫ হাজার টাকা ফেরত দেয়া রিকশাচালক আব্দুল আজিজ (৫৫)।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রিকশাচালক আজিজের হাতে পুরস্কারস্বরূপ ৫ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়।
সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান আব্দুল আজিজকে এ টাকা প্রদান করেন। ঈদের পর তাঁকে আরও সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন জেলা প্রশাসক।
নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার নোয়াপাড়া গ্রামের মৃত মো. আব্দুল হামিদ খানের ছেলে আব্দুল আজিজের বাড়ি। সিলেট নগরীর বালুচর এলাকায় তাঁর বর্তমান আবাসস্থল।
পুরস্কার হাতে পেয়ে আব্দুল আজিজ জানান, আমি খুব খুশি। আমার কাজে খুশি হয়ে ওই টাকার আসল মালিকও আমাকে ২ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান আব্দুল আজিজকে বলেন, আপনি (আজিজ) আমাদের হিরো। আপনার মতো এমন সৎ মানুষ আজকাল দেখা যায় না। আপনাকে পুরস্কৃত করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে।
প্রসঙ্গত, ১১ জুন জিন্দাবাজারে রাস্তায় ৮৫ হাজার টাকা কুড়িয়ে পান আক্তারুজ্জামান নামের এক রিকশাচালক। এসময় জিন্দাবাজারে দায়িত্বপালনরত ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এম. সাজ্জাদুল হাসান ও উম্মে সালিক রুমাইয়ার কাছে ওই টাকা জমা দেন তিনি।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন আমিনুল ইসলাম রুহেল নামের এক ব্যক্তি। তিনি দাবি করেন, কুড়িয়ে পাওয়া টাকার বান্ডিলটি তার।
পুলিশের প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন, ওই বান্ডিলে কতো টাকার কয়টি নোট রয়েছে। রুহেলের বক্তব্যের সত্যতা খুঁজে পায় পুলিশ। এরপর রুহেলের দাবি অনুযায়ী প্রাইম ব্যাংকের লালদীঘিরপাড় শাখায় যায় পুলিশ।
সঙ্গে যান দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সালিক রুমাইয়া ও এম সাজ্জাদুল হাসান। সেখানে গিয়ে চেক বইয়ের কপি মিলিয়ে এবং ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ রুহেলের দাবির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। এরপর সেই ৮৫ হাজার টাকা রুহেলের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।
রিকশাচালকের এমন সততায় মুগ্ধ হয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সালিক রুমাইয়া ও এম সাজ্জাদুল হাসান সেদিন ওই রিকশা চালকের নাম ও ঠিকানা রেখে দিয়েছিলেন।
সততার জন্য ওই রিকশা চালককে পুরস্কার দেবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁরা। অবশেষে তাদের উপস্থিতিতেই আজ পুরস্কৃত হলেন রিকশাচালক আব্দুল আজিজ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার আশরাফুল হক।