ডিম ও দুধ দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো খাবার। দুধে প্রচুর পুষ্টি-উপাদান থাকে। ক্যালসিয়াম ছাড়া দুধের মধ্যে ফসফরাস, আয়রন, জিংক, কপার, ম্যাঙ্গানিজের পরিমাণও অনেক বেশি থাকে। দুধ খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিয়মিত দুধ খেলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা কমে যায়। দুধ অন্যান্য খাবারের বিষাক্ত উপাদানের ক্ষতি কাটায়। দুধ খেলে আমাদের শরীরে সেরোটোনিনের (Serotonin) পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি ‘ব্রেইন ক্যামিকেল’ নামে পরিচিত। এই উপাদান শরীরে পর্যাপ্ত সৃষ্টি হলে মন ভালো থাকে, মুড ভালো থাকে। তাই একে অনেকে ‘হ্যাপি হরমোন’ বলেও ডাকেন। দুধ খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে। দুধ খেলে শরীরের হাড় ও দাঁতের সামর্থ্য বাড়ে। দুধ খেলে হৃৎপিণ্ডের সামর্থ্য বাড়ে। যারা নিয়মিত দুধ পান করেন তাদের যেকোনো ক্ষত দ্রুত সেরে যায়।
অপরদিকে, ডিম-এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। ডিমের কেরোটিনয়েড, ল্যুটেন ও জিয়েক্সেনথিন চোখের ছানি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। ছোট্ট একটি ডিম হাজারো ভিটামিনে ভরা। এর ভিটামিন বি-১২ আমাদের গ্রহণকৃত খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ভিটামিন ডি, যা পেশীকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে। ডিমের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের নাস্তায় একটি ডিম খেলে সারাদিন আপনার ক্ষুধা কম হবে। তাই খাওয়াও হবে কম। গবেষণায় দেখা যায় শরীর থেকে দিনে প্রায় ৪০০ ক্যালরি কমাতে পারে সকালে একটি ডিম খাওয়াতে। একটি ডিমে রয়েছে ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন বা ৭০-৮৫ ক্যালরি। যা রোজকার প্রোটিনের চাহিদার অনেকটা পূরণ করে। ডিমে রয়েছে আয়রন, জিংক, ফসফরাস। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আর ফসফরাস হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে
এখন প্রশ্ন হচ্ছে দুধ-ডিম একসঙ্গে খেলে কী হয়? অনেকেই বলে থাকেন দুধের পর নাকি মাংস বা ডিম জাতীয় প্রোটিন খাওয়া ভালো নয়। এতে নাকি শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়তে পারে।কিন্তু নতুন গবেষণা বলছে, দুধের পরে বা সঙ্গে ডিম খাওয়া মোটেই খারাপ নয়। বরং এর ফলে শরীরের উপকারই হয়। তাই সেদ্ধ ডিম বা ডিমের পোচ দুধের সঙ্গে খেলে উপকার অনেক বেশি। তবে কাচা দুধ বা কাচা ডিম খেলে শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ, এতে ফুড পয়েজনের সম্ভাবনা থাকে।