‘আর্লি টু বেড আর্লি টু রাইজ, মেক্স এ ম্যান হেলদি, ওয়েলদি এন্ড ওয়াইজ’। সোজা বাংলায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে খুব ভোরে জেগে ওঠার অভ্যাস একজন মানুষকে স্বাস্থ্যবান, সচ্ছল ও জ্ঞানী করে তোলে। আধুনিক সমাজে দিনদিন মানুষের ব্যস্ততা বেড়েই চলেছে। কর্মব্যস্ততার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে অনেকের মধ্যেই রাতে দেরি করে ঘুমানোর বদভ্যাস গড়ে উঠেছে। কারণ অনেকেই রাত জেগে কাজ করে বাড়তি কাজের চাপ কিছুটা কমিয়ে নিতে চান।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটনাটি হয়ে যায় উল্টো। যারা রাতে দেরি করে ঘুমাতে যান এবং ধীরে ধীরে এটা যাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে; তারা স্বাভাবিকভাবেই কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। যাদের এই অভ্যাস হয়ে গেছে, তাদের জন্য এ অভ্যাস ত্যাগ করা সহজ নয়; তবে এটা অসম্ভবও নয়।
প্রথমে দেরিতে না ঘুমানোর জন্য সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। দেরিতে ঘুমানোর কারণে যে মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি হয় সে ব্যাপারে নিজেকে নিজের বুঝাতে হবে। মোটকথা, নিজের মনকে নিজে শাসন করতে হবে। তাহলে এক সময় অভ্যাস ত্যাগের দৃঢ় ইচ্ছা গড়ে উঠবে।
ঘুমের আগে শরীর ও মনকে রিলাক্স করাটা জরুরি। এজন্য কিছু অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে। যেমন: ঘুমের আগে কুসুম গরম পানিতে হাত মুখ ধুয়ে নেওয়া, গরম দুধ পান করা, মৃদু আওয়াজে গান শুনা কিংবা কোনো বই পড়া ইত্যাদি।
ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পূর্বে রাতের খাবার গ্রহণ করা। রাতের খাবার হালকা হওয়াই উত্তম। সম্ভব হলে রাতের খাবারের পর একটু হাঁটাহাঁটি করা ভালো। মানসিক উত্তেজনা পরিহার করা উচিৎ। রাতে শোবার অন্তত এক ঘণ্টা পূর্বে মোবাইল, টিভি ও অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এই ডিভাইসগুলোর স্ক্রিন থেকে যে আলো নিঃসৃত হয় তাতে মস্তিষ্কের বিরূপ প্রভাব পড়ে এবং ঘুম দেরিতে আসার অভ্যাস তৈরি হয়। অফিসের ব্যস্ততা কমানোর জন্য অফিসের কাজ বাসায় না আনাই ভালো। অফিসের কাজের চাপের কারণে অনেকই রাত জেগে কাজ শেষ করার চেষ্টা করেন। আর এই কারণে তৈরি হয় রাত জাগার অভ্যাস।
রাত জাগার অভ্যাস এর কারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় অনেকেই। রাতে দেরি করে ঘুমালে সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যায়। এতে সারা দিনের কাজ রিলাক্স মুডে করা যায় না। মেজাজ খিটখিটে থাকে অনেক বেশি। এছাড়া বিভিন্ন অসুখ বিসুখ যেমন: ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ, কিডনীর সমস্যা ইত্যাদি হতে পারে।
এছাড়া রাতে দেরিতে ঘুমের অভ্যাসের কারণে মোটা হয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা হতে পারে যেমন: মেছতা, ব্রন, চুলপড়া এবং চোখের চারপাশে কালোদাগ ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। তাই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমের অভ্যাস করা প্রয়োজন।