ঘষে মেজে প্রস্তুত করা হচ্ছে পুরনো সব গাড়ি। ঈদ টার্গেট করে এসব গাড়ি রাস্তায় নামানোর প্রস্তুতি চলছে। রাজধানীর আশপাশের শতাধিক গ্যারেজে এই গাড়িগুলো মেরামত চলছে। গ্যারেজের মিস্ত্রিদের তাই ব্যস্ত সময় কাটছে। কয়েকজন মিস্ত্রির সাথে আলাপ করে জানা যায়, ঈদের আগে এই গাড়িগুলো রাস্তায় নামবে। এই গাড়িতে দূরপাল্লার যাত্রী বহন করা হবে। এসব গাড়ি বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা।
রাজধানীর আশপাশের গ্যারেজগুলোর মিস্ত্রিরা এখন দারুণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাদের হাতে অনেক কাজ। দিনরাত পরিশ্রম করছেন লক্কড়ঝক্কড় গাড়িগুলো মেরামতের জন্য। কোনো কোনোটির অবকাঠামো একেবারেই বদলে ফেলতে হচ্ছে। গ্যারেজগুলোতে পুরনো গাড়ির লাইন। কোনোটির বডি মেরামত চলছে। আবার কোনোটির গায়ে নতুন রঙ লাগানো হচ্ছে। নতুন রঙ পেয়ে চকচকে হয়ে উঠছে ওই পুরনো গাড়িগুলো। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই এই গাড়িগুলো রাস্তায় নামবে যাত্রী পরিবহনের জন্য। ঈদে এই গাড়িতে চড়ে যাত্রীরা যাবেন দূরদূরান্তে। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী আমিনবাজার, আশুলিয়া, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, মিরপুর বেড়িবাঁধ, হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ, বছিলা, কেরানীগঞ্জ, ফতুল্লা, শ্যামরপুর, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, রূপগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে শতাধিক গ্যারেজ রয়েছে যেখানে পুরনো গাড়ির ঘষা মাজা চলছে। বিভিন্ন রুটে চলাচলের অনুপযুক্ত গাড়িগুলো এসব গ্যারেজে আনা হয়েছে। এই গাড়িগুলোর কোনো ফিটনেস নেই। আমিনবাজারের এক গ্যারেজ মিস্ত্রি জানান, এই গাড়িগুলো মেরামত করতে গড়ে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করছেন মালিকেরা। এরমধ্যে পুডিং দেয়া হয়, কোনো স্থানে ঝালাই লাগলে ঝালাই দেয়া হয়, রঙ লাগানো হয়। রঙের কাজই বেশি। ওই মিস্ত্রি বলেন, এই গাড়িগুলো রাস্তায় নামলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই গাড়িগুলো রাস্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে এই গাড়িগুলো যখন দূরপাল্লায় যাত্রা করবে তখন যেকোনো অঘটন ঘটতে পারে। রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান বলেন, প্রতি বছর এমন হয়ে থাকে। পুরনো লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি মেরামত করে রাস্তায় নামানো হয়। এই গাড়িগুলোই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাস্তায় বিকল হয়ে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করে। এই গাড়িগুলোর ফিটনেস নেই, রুট পারমিট, চালকের লাইসেন্স নেই। গাড়িগুলোর যারা মালিক তাদের চিহ্নিহ্ন করে রুট পারমিট বাতিল করা উচিত এবং শাস্তি দেয়া উচিত।
নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, এই ধরনের গাড়িগুলো অবশ্যই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। ফিটনেস নেই বলেই রঙচঙ করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফিটনেস না থাকলে সেসব গাড়িতো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। এই ধরনের গাড়ি রাস্তায় নামার আগেই তদারকি করা উচিত। রাস্তায় নামলেই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বাস ও বাসের লাইসেন্স যাচাই বাছাই করা উচিত। এই গাড়িগুলো যেসব চালকেরা চালাবেন; তাদের লাইসেন্স বিআরটিএ প্রদান করেছে কিনা তা দেখা উচিত।