দেখতে দারচিনি। আসলে অজ্ঞাত গাছের ছাল। বোঝার উপায় নেই এটা আসল না নকল। আর তা দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের খাবার। এক বাবুর্চির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভালোভাবে দেখে বোঝা যায় এটা অজ্ঞাত গাছের ছাল। আসল দারচিনির সাথে মিশিয়ে দেদার বিক্রি হচ্ছে বাজারে। এতে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন। আজ সোমবার এ রকম ঘটনা ধরা পড়ে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা নতুন বাজারের এক মনোহারি দোকানে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই বাজারের ব্যবসায়ী মো. ফিরোজের দোকান থেকে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য এক বাবুর্চি অন্যান্য মসলার সঙ্গে বেশ কিছু দারচিনি ক্রয় করেন। পরে তিনি বিয়েবাড়িতে রান্না শেষে অভিযোগ পান দারচিনি দিয়ে রান্না করা মাংস ছাড়াও পায়েস হয়েছিল তিতা এবং দুর্গন্ধে ভরপুর। যা খেয়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা কানাঘুষা শুরু করলে ওই বাবুর্চি আয়োজকের তোপের মুখে পড়েন। কী কারণে এ সমস্যা হচ্ছে খোঁজ নিয়ে দেখতে পান সব ধরনের মসলা ঠিক থাকলেও দারচিনি ছিল নকল।
পরে ওই বাবুর্চি বিক্রেতা ফিরোজের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানালে দোকানদার ফিরোজ মিয়া কার্টনভর্তি দারচিনি বের করে দেখতে পান আসল দারচিনির সঙ্গে অজ্ঞাত গাছের ছাল মেশানো হয়েছে। যা দেখে বোঝার উপায় নেই এটা আসল না নকল।
ফিরোজ মিয়া জানান, তিনি গত এক মাস আগে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আঠারবাড়ী রায়ের বাজারের মেসার্স ত্রিনাথ ভাণ্ডার নামক পাইকারি দোকান থেকে অন্যান্য মালামালের সঙ্গে ১০ কেজি ওজনের এক কার্টন দারচিনি ক্রয় করেন ৪৫০ টাকা কেজি দরে। খুচরা হিসাবে তিনি ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি করেন। এ অবস্থায় ক্রেতাদের অভিযোগ পেয়ে তিনি ওই দোকানে গিয়ে দারচিনি ফেরতসহ কেন নকল মাল দেওয়া হলো জানতে চাইলে ওই ব্যবসায়ীর তোপের মুখে পড়েন।
আজ সোমবার মেসার্স ত্রিনাথ ভাণ্ডারের মালিক বাবুল বণিকের কাছে নকল দারচিনির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো আর চুরি করে আনিনি। যা কিনে এনেছি তাই বিক্রি করেছি। বিক্রীত মাল ফেরত নেওয়া হয় না। ‘
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আঠারবাড়ী এলাকার রায়ের বাজারের মোকামে কতিপয় পাইকারি বিক্রেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নকল মসলা বিক্রির অভিযোগ উঠলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এতে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন।
অভিজ্ঞরা জানান, ভালো দারচিনিতে থাকবে মিষ্টি একটা গন্ধ এবং এর স্বাদ হবে ঝাঁজালো মিষ্টি। ভেজাল দারচিনি কিছুক্ষণ হাতের মুঠোতে রাখলে গন্ধ হবে না। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজা জেসমিন জানান, এটা মারাত্মক প্রতারণা। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, ‘এ ব্যাপারে খুব দ্রুতই আমরা অভিযানে নামব। ‘