`রাজসাক্ষী` হচ্ছেন হেফাজতের অনেক নেতা

হেফাজতের কেন্দ্রীয় ১৯ জন নেতা একন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়াও সারাদেশে মাঠ পর্যায়ের হেফাজতের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আটক হয়েছে এবং এদের অনেককেই রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই সমস্ত জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সরকার যেটি শঙ্কা করেছিলো সেটি এখন তথ্যসহ প্রমাণিত হচ্ছে বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রগুলো বলছে যে, হেফাজতকে ব্যবহার করেছিলো বিএনপি এবং জামায়াত। বিএনপি এবং জামায়াত তাদের সরকারবিরোধী আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার জন্য এবং সরকারকে চাপে ফেলার জন্যই হেফাজতকে ব্যবহার করেছিলো। এইজন্যই হেফাজতকে আন্দোলন করার ক্ষেত্রে প্ররোচিত করেছিলো। কিভাবে হেফাজতকে প্ররোচিত করেছিলো এ সম্পর্কে হেফাজতের আটক নেতারা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন। এই তথ্যগুলো এতো বেশি চাঞ্চল্যকর এবং লোমহর্ষক যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও অবাক হয়ে যাচ্ছে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক সূত্র বলছে যে, বিএনপি আসলে প্রথম বৈঠক করেছিলো নিজেদের মধ্যে এবং লন্ডন থেকে তারেক জিয়া বৈঠক করে সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতা এবং সহিংসতার তীব্র করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলো। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই হেফাজতের নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলছে যে, হেফাজতের বর্তমান যে নেতৃত্ব সেই নেতৃত্বের মধ্যে ২০ দলীয় জোটের আধিপত্য রয়েছে। যেখানে খেলাফতে মজলিস, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ দলগুলির নেতৃবৃন্দকে জড়ো করা হয়েছে। অথচ হেফাজতকে বলা হয় একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। বাবুনগরী দায়িত্ব গ্রহণের পর হেফাজত আসলে একটি ২০ দলীয় জোটের অঙ্গ সংগঠনের পরিণত হয়েছিলো এবং ২০ দলীয় জোট হেফাজতকে দিয়ে দেশ একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়েছিলো।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, হেফাজতের আটক নেতারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পরই জুনায়েদ বাবুনগরী তাদেরকে বলেছেন যে, সরকারকে অস্থির করে তুলতে হবে এবং কোনো ভাবেই যেন সরকার শান্তিতে থাকতে না পারে সে জন্য যা যা করা দরকার করতে হবে। আর এ কারণেই তারা প্রথমেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে ইস্যু করে। এরপর তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়েও বিরোধিতা করে। মূলত হেফাজত যেন একটি ভয়ঙ্কর পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং সরকার যেনো হেফাজতকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকে এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছিলো বিএনপি। বিএনপির পরিকল্পনা ছিলো যখন হেফাজত তাণ্ডব চালাবে তখন সরকার কোণঠাসা হয়ে পড়বে, দুর্বল থাকবে তখন সরকারের ওপর আঘাত হানবে বিএনপি-জামায়াত।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে সরকারের পতন হবে বলে মনে করতো বিএনপি`র কেউ কেউ। এখন হেফাজতের নেতারা বিএনপি`র কোন কোন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তাদেরকে কিভাবে প্ররোচিত করেছিলো এবং অন্যান্য ধরনের সহযোগিতা করেছিলো সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যাদি দিচ্ছেন। এর ফলে হেফাজতের কিছু কিছু নেতা এই ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং সন্ত্রাস নাশকতা মামলায় রাজসাক্ষী হতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তারা সুনির্দিষ্ট করে বিএনপি নেতাদের নাম বলবেন। যারা এ ধরনের সহিংসতা এবং আর সন্ত্রাসকে প্ররোচিত করেছিলো। এই সন্ত্রাস এবং সহিংসতার মূল পরিকল্পনাকারীদের নাম বলবে হেফাজতের রাজসাক্ষীরা।