বাকি রইলো বাবুনগরী

একে একে হেফাজতের উগ্র মৌলবাদী প্রায় সব নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের কঠোর সাঁড়াশি অভিযানের প্রেক্ষিতে আজ মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামুনুল হকের গ্রেফতার হওয়া নিয়ে কিছুদিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছিলো।

বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে কথিত স্ত্রীকে নিয়ে রঙ্গলীলার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন মামুনুল। এরপর থেকেই মামুনুল হক গ্রেফতার হবেন এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছিলো। কেউ কেউ মনে করছিলো মামুনুল হকের খুঁটি অনেক শক্ত এবং সরকার হেফাজতকে ভয় পায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা ১২ বছরের সরকার মামুনুল হককে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করলো অন্যায়কারীর ব্যাপারে সরকারের শূণ্য সহিষ্ণুতা নীতি বহাল রয়েছে।

প্রত্যেকেরই একটা মাত্রা আছে। আর সেই মাত্রা অতিক্রম করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হয় না সেটি মামুনুল হকের গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে প্রামাণিত হলো। মামুনুল হকের গ্রেফতারের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন জুনায়েদ বাবুনগরী কখন গ্রেফতার হবেন।

বিশেষ করে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের ঢাকা তাণ্ডবের অন্যতম পরিকল্পনাকারী হলেন বাবুনগরী। তার নির্দেশেই সেসময় পল্টন, মতিঝিলসহ ঢাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিলো হেফাজতের কর্মীরা। সেসময় বাবুনগরী বাংলাদেশকে ইসলামীক প্রজাতন্ত্র ঘোষণার হুংকার দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন তিনি হবেন সেই ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী। সেসময় জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুেদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। কিন্তু নানা বাস্তবতায় সেই মামলা আর আগায়নি। এরপর জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজত দখল করেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্রের নীল নক্সা বাম্তবায়নের পথে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

গত বছরের নভেম্বরে জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের আমির হওয়ার পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা শুরু করেন। এক পর্যায়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সারাদেশে উস্কানি ছড়ান। এই উস্কানিতে ২৬ ও ২৭ মার্চ সারাদেশে তাণ্ডব করে হেফাজত। এই তাণ্ডবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান চলছে সরকারের। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা প্রস্তুত, তার গ্রেফতার এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। সরকার হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে সবকিছু তছনছ করার নীতিতে না গিয়ে ঠান্ডা মাথায় ধীরে ধীরে বিষয়টি নিয়ে এগুতে চাইছে। আর এ কারণে জুনায়েদ বাবুনগরীর গ্রেফতারের প্রক্রিয়াটা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট সকলেই মনে করেন হেফাজতকে দমন করতে গেলে জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতারের কোনো বিকল্প নেই। গত শুক্রবারেও বাবুনগরী সরকারের বিরুদ্ধে উস্কনিমূলক এবং রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য রেখেছেন। এখন দেখা যাক কোন মামলায় কীভাবে জুনায়েদ বাবুনগরী গ্রেফতার হন।