দা’ফনের ১১ দিন পর জীবিত উ’দ্ধার সাথী!

গত ২৯ আগস্ট রাতে যশোরে সরকারি সিটি কলেজ এলাকা থেকে পলিথিন মোড়ানো অজ্ঞাতপরিচয় এক তরুণীর গলাকাটা লা’শ উ’দ্ধার করে পু’লিশ। এই লা’শ উ’দ্ধারের খবরে পর দিন ৩০ আগস্ট যশোর কোতোয়ালি থা’নায় ছুটে যান চৌগাছার নয়ড়া গ্রামের আমজাদ আলী। তিনি ‘অজ্ঞাতপরিচয় লা’শটি’ তার মেয়ে সাথী খাতুনের বলে শনা’ক্ত করেন।

সেই লা’শ উ’দ্ধার ও দা’ফনের ১১ দিন পর সেই সাথী খাতুনকে জীবিত উ’দ্ধার করেছে পু’লিশ। ‘পরকীয়া প্রেমিকের’ ধ’র্মপিতার বাড়ি সদর উপজে’লার জলকর গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়ি থেকে রোববার সকালে পু’লিশ তাকে জীবিত উ’দ্ধার করেছে।

চৌগাছার নয়ড়া গ্রামের আমজাদ আলীর মেয়ে সাথী খাতুন চৌগাছার চাঁদপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার স্ত্রী। তাদের এহসান নামে ছয় বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

সাথীর ভাই বিপ্লব হোসেন বলেন, সাথী গত ১৪ জুলাই ‘বাইরে কাজে যাচ্ছি, বিকেলে ফি’রে আসবো’ বলে স্বামীর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান ছিল না।

সাথী নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা আমজাদ আলী বাদি হয়ে চৌগাছা থা’নায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন।
গত ২৯ আগস্ট রাতে যশোরে সরকারি সিটি কলেজ এলাকা থেকে লা’শ উ’দ্ধারের খবরে পর দিন ৩০ আগস্ট যশোর কোতোয়ালি থা’নায় ছুটে যান চৌগাছার নয়ড়া গ্রামের আমজাদ আলী।

তিনি ‘অজ্ঞাতপরিচয় লা’শটি’ তার মেয়ে সাথী খাতুনের বলে শনা’ক্ত করেন। বিপ্লব হোসেন দা’বি করেন, তার বাবা লা’শ দেখে হতবিহ্বল হয়ে তাৎক্ষণিক লা’শটি তার বোনের বলে শনা’ক্ত করেছিলেন। কিন্তু পরে এ নিয়ে তদ’ন্ত হলে তিনি জানতে পারেন তার ভুল হয়েছে।

উ’দ্ধার হওয়া সাথী খাতুন বলেন, ‘স্বামীর নি’র্যাতন থেকে রেহাই পেতে ১৪ জুলাই স্বামীর বাড়ি ছে’ড়ে যশোরে চলে আসি। শহরের নিউ মা’র্কে’টে বাস থেকে নেমে এক ঘণ্টা বসেছিলাম। একপর্যায়ে সদরের ফতেপুর ইউনিয়নের জলকর গ্রামে যাই। যাওয়ার পথে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ভে’ঙে পানিতে ফে’লে দিই।

এরপর ওই গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়িতে আশ্রয় নিই। গত ৭ সেপ্টেম্বর আজিজ লস্কর পত্রিকার পাতায় আমা’র মৃ’ত্যুর সংবাদ দেখেন। তারপর থেকে তিনি আমাকে আর আশ্রয় দিতে রাজি হননি।

এরপর ৭ সেপ্টেম্বর বাড়িতে আব্বার মোবাইল নম্বরে (মুখস্থ ছিল) কল করি। পু’লিশকেও বিষয়টা জা’নাই। পু’লিশ আজ উ’দ্ধার করেছে। মা’মলার তদ’ন্ত ক’র্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলছেন, ‘মেয়েটির সাথে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময়ে একাধিক ছেলের স’স্পর্ক ছিল।

তদ’ন্ত ক’রতে গিয়ে পরিবারের লোকজন জা’নালো গত ১৬ মা’র্চ সাথী খাতুন ভারতে গিয়েছিল চিকিৎ’সার জন্য। এক মাস ১১ দিন পর চিকিৎ’সা শেষে দেশে ফেরেন। তবে সাথী একাই গিয়েছিলেন ভারতে।

বিষয়টি আমা’র সন্দে’হ হয়। এরপর সাথীর পাসপোর্ট বইটি যাচাই করি। এতে দেখা যায় সাথী ১৬-২৪ মা’র্চ ভারতে ছিলেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন বলছেন ১ মাস ১১ দিন। তাহলে বাকি দিন কোথায় ছিলেন?

ভারতে থাকাকালীন সাথী ভারতের একজনের মোবাইল নম্বর থেকে কথা বলেছিলেন। সেই নম্বরও জোগাড় করি। কথা বলে জানতে পারি, সাথী ভারতে প্রবেশ করার এক ঘণ্টা আগে মালেশিয়া প্রবাসী চাঁদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মান্নু ওপারে (ভারতে) হাজির হন। পরে চিকিৎ’সা শেষে ২৪ মা’র্চ সাথী ও মান্নু দেশে আসেন।

২৪ মা’র্চ থেকে এক মাসের বেশি সময় সাথী ও মান্নু যশোর সদর উপজে’লার জলকর গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়িতে অব’স্থান করেন। তাহলে যে লা’শ দা’ফন করা হয়েছে, সেটি কার?

এমন প্রশ্নের জবাবে মা’মলার তদ’ন্ত ক’র্মকর্তা এসআই আমিরুজ্জামান বলেন, ধ’রে নিয়েছিলাম ওই লা’শটি সাথীর। কিন্তু তদ’ন্ত ক’রতে গিয়ে আ’সল রহ’স্য উন্মোচন হয়েছে। এবার ওই লা’শটি আ’সলে কার, সেই রহ’স্য উদঘাটনে কাজ করব।