অতিরিক্ত ঘাম কমানোর ঘরোয়া উপায়

বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ অতিরিক্ত ঘামের যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন। আর গ্রীষ্মকাল মানেই দিনের বেলা সূর্যের প্রখর রোদ। আর তীব্র রোদে বাইরে-যাওয়া আসা মানেই ঘেমে গিয়ে শরীরে বিরক্তিকর অবস্থা সহ্য করা।

হাইপারহাইড্রোসিসের সমস্যার কারণে মানুষের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ঘাম হয়। সুতরাং যারা বেশি ঘামেন, তারা জেনে নিন ঘরোয়া উপায়ে ঘাম কমানোর উপায়-

নারিকেল তেল:
একটি বাটিতে নারকেল তেল নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো কর্পূর মিশিয়ে নিন। গোসলের পর প্রায় ১ ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। শরীরের যেসব জায়গায় ঘাম বেশি হয় সেখানে লাগাতে হবে মিশ্রণটি। পরে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

লেবু:
লেবু প্রাকৃতিক ডিওডরেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা ঘাম থেকে তৈরি দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে পরিমাণমতো লেবুর রস মিশিয়ে সেটা দিয়ে তোয়ালে ভিজিয়ে সারা শরীর ভালোভাবে স্পঞ্জ করে ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করে ফেলতে হবে। এভাবে প্রতিদিনই গোসলের আগে গায়ে লেবুর রস মিশ্রিত পানি স্পঞ্জ করে নিতে হবে।

লাল চাঃ
অতিরিক্ত ঘাম কমাতে লাল চা বেশ কার্যকারী। লাল চায়ে থাকা ট্যানিক অ্যাসিড ঘাম প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া লাল চা ঘাম গ্রন্থি সংকোচন করে অতিরিক্ত ঘামানোর হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ৩-৪ কাপ গরম পানিতে একটি বা দুইটি টি-ব্যাগ ভিজিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। তারপর ওই পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে বগল ও গলায় লাগাতে হবে।

বেকিং সোডাঃ
বেকিং সোডা শরীরকে অতিরিক্ত ঘামের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। পরিমাণমতো পানির সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর এই পেস্টের সঙ্গে পছন্দমতো তিন থেকে চার ফোঁটা সুগন্ধী তেল মিশিয়ে নিয়ে বগলে এবং যে সব জায়গা বেশি ঘামে সেসব জায়গায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে উপকার পাওয়া যাবে।

টমেটোর রসঃ
টমেটোতে আছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট যা ঘাম গ্রন্থিকে সংকুচিত করে। তাছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে অতিরিক্ত ঘামানোর প্রবণতা কমিয়ে আনে। তাই টমেটোর রস পান করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। তাছাড়া বেশি ঘাম হয় এমন স্থানগুলোতে টমেটোর রস লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিলেই ঘাম কম হবে। ঘাম নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এভাবে গোসল করলে উপকার পাওয়া যাবে।

অ্যাপল সাইডার ভিনিগারঃ
ঘাম নিয়ন্ত্রণ করতে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার বেশ কার্যকরী। প্রথমে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া স্থানগুলো ভালো মতো পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর তুলার বলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার নিয়ে ওই স্থানগুলোতে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিতে হবে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে গোসল করে পাউডার বা ডিউডরেন্ট লাগাতে হবে। এছাড়া চাইলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার খাওয়ার অভ্যাস করলেও অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে এক গ্লাস পানিতে ২ টেবিল-চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ও ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।