বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনের মামলায় বিএনপি নেতা নবী গ্রেপ্তার

রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। অপর আসামি হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব দলের সদস্য মুনসুর আলম।

ধবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলহাস উদ্দিন তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া সুলতানার আদালতে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা রেলওয়ে থানার অফিসার ইনর্চাজ ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস।

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে চলন্ত বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন ওই ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) এসএম নুরুল ইসলাম (৫৭) বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৫ জানুয়ারি দুপুর ১টায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেনাপোল রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে। ট্রেনটি রাত আনুমানিক ৯টার সময় সায়েদাবাদ এলাকা পৌঁছানো মাত্র ট্রেনের ৭৯৩৭ নম্বর কোচের বগি ‘চ’ তে ধোঁয়া দেখে চিৎকার শুরু করেন যাত্রীরা। তখন ওই বগিতে ডিউটিতে থাকা মোহাম্মদ আলী আগুন আগুন বলে চিৎকার করে যাত্রীদের সতর্ক হতে বলেন। একই সঙ্গে টেনের শিকল টেনে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় ভ্যাকুয়াম প্রেস করে ট্রেনটি থামানো হয়।

মামলায় আরও বলা হয়, রাত আনুমানিক ৯টা ২ মিনিটের দিকে গোপীবাগ ও গোলাপবাগের মাঝামাঝি জামে মসজিদের সামনে ট্রেনটি থামে। ততক্ষণে আগুন দাউ দাউ করে ‘চ’ বগি থেকে ‘ছ’ বগিতে এবং ‘পাওয়ার কার নম্বর ৭৫২৬ ‘ভ’ বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। তখন আমি (মামলার বাদী) তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে ট্রেনে থাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম পাঠানোর অনুরোধ করি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, অল্প সময়ের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। ফায়ার সার্ভিস রেলওয়ে পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি), ডিএমপি পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে ট্রেনের তিনটি বগির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুন নেভানোর পর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল, রেলওয়ে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আরএনবি ও ডিএমপি পুলিশের সহায়তায় তল্লাশি চালিয়ে ‘চ’ বগি থেকে একজন নারীসহ চারজনের বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ১০-১২ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানতে পারি। পরবর্তীতে রেলওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠায়।