নীলফামারী-২ (সদর) আসনে টানা পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে রাতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূর ১ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৬৮৪ ভোট। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহজাহান আলী চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৪৩ ভোট।
এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়।
নীলফামারী-২ (সদর) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩ এবং পুরুষ ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭১৮ জন। নীলফামারী সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনের ১৩৫টি ভোটকেন্দ্রের ৮০১টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আসাদুজ্জামান নূর ১৯৬৩ সালে তদান্তাধীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি নীলফামারী কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীনের পর কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে নিজেকে বিরত রেখে সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি পর্যায়ে তিনি আবারও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন।
আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২ আসন থেকে ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ৯ম জাতীয় সংসদের বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ১২ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।