‘বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি একটি মিটিং হয়।
মিটিংটি শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ মিনিটের এই মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত হওয়ার পর একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। এর পরে শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়।’
গ্রেপ্তারের পর ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানান যুবদল নেতা কাজী মনসুর। কাজী মনসুরের দেওয়া জবানবন্দির এক ভিডিওতে এসব বিষয়ে বর্ণনা দেন তিনি।
রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী ও যুবদল কাজী মনসুরসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ট্রেনের আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহত এবং ৮ জন দ্বগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থাও ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
জিজ্ঞাসাবাদে কাজী মনসুর ডিবিকে জানায়, তারা গতকাল একটি ভার্চুয়াল মিটিং করেন। মিটিং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। প্রায় ১৭ মিনিট ধরে মিটিংটি চলে। ভার্চুয়ালি এই মিটিং এ দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত ভোট কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ করার জন্য, যাতে করে ভোটাররা ভয়ে সেখানে না আসে।
আর দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার। এ সময় মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন ট্রেনে আগুন দিতে পারবে কে। তখন মিটিংয়ে উপস্থিত একজন রাজি হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার বিষয়ে।
মনসুর পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে আরও বলেন, মিটিংয়ে রবিউল ইসলাম বলেন— কিশোরগঞ্জ থেকে আসা কোনো ট্রেন ঢাকায় ঢোকার পর কিংবা নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। তখন রবিউল ইসলাম মিটিংয়ে একজনকে দায়িত্ব দেয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য।
এদিকে শনিবার (৬ জানুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর।
‘তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা বলেন।
আরেকটি স্থানও তারা নির্ধারণ করেন। কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনের আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন।’