শাহরুখ খান অভিনীত হিন্দি ‘জাওয়ান’ সিনেমা ঘিরে দর্শকের উচ্ছ্বাস আকাশসম। ভারতের সঙ্গে একযোগে বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে ‘জাওয়ান’ সিনেমা। তবে শুরু থেকে দেশে ‘জাওয়ান’ মুক্তির বিরোধীতা করে আসছেন প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। জানিয়েছিলেন, সিনেমাটি মুক্তি পেলে একাই আন্দোলনে নামবেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তা করেননি।
চলচ্চিত্র পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু জানালেন, ‘জাওয়ান’ হিন্দি ছবি নয়। এটি উর্দু ভাষার ছবি। দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘কে বলল জওয়ান হিন্দি ছবি? এটা হিন্দি নাম দিয়ে চলছে। আসলে এটা ৮০ ভাগ উর্দু ছবি। বললে হবে না। এই ভাষা আমাদের সংস্কৃতির ওপর আঘাত করেছিল। তাই আমরা পথে নেমেছিলাম। বঙ্গবন্ধুও এই ভাষার ছবিকে বাংলাদেশে মুক্তি দিতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু আমরা কী করলাম?’
ভারতীয় এই সিনেমাটির সঙ্গে মুক্তি পেয়েছে ঝন্টুর ‘সুজন মাঝি’ নামের একটি সিনেমা। এ কারণে তার ক্ষোভটা একটু বেশি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের ছবি মুক্তি পাক, আমার আপত্তি নেই। যদিও আমি এর ঘোর বিরোধী, কারণ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যেহেতু চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলো অনুমোদন দিয়েছে, তাই আমি আর আপত্তি করি না। তবে একই সপ্তাহে কেন মুক্তি দিতে হবে? সপ্তাহের কি অভাব পড়েছে? বাংলাদেশের ছবি থাকতে কেন ভারতের ছবি একই সপ্তাহে মুক্তি দিতে হবে?’
একই তারিখে মুশফিকুর রহমান গুলজার পরিচালিত ‘দুঃসাহসী খোকা’ সিনেমাটিও মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ‘জাওয়ান’র কারণে মুক্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়। এটা নিয়েও তার প্রতি ক্ষোভ ঝাড়লেন তিনি।
ঝন্টু বলেন, “আমি তো জানি ‘দুঃসাহসী খোকা’ সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছিল গুলজার (মুশফিকুর রহমান গুলজার)। সিনেমা মুক্তির তিন-চার দিন আগে এসে আমাকে বলেছিল, যেন কোনোভাবেই সিনেমা মুক্তির তারিখ না পেছাই। পরে সে-ই নিজের ছবি পিছিয়ে দিয়ে ‘জাওয়ান’কে মুক্তির জায়গা করে দিল।”
গ্রাম্য পটভূমিতে নির্মিত হয়েছে ‘সুজন মাঝি’ সিনেমা। কিন্তু এই সময়ে এসে এমন গল্পের ছবি নির্মাণ মোটেই মেনে নিতে পারছেন না দর্শক। তবে ঝন্টু জানালেন, ছবির গল্প প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ভালো লেগেছে।
ঝন্টু বলেন, ‘আমার ছবিটি দর্শক খুবই পছন্দ করেছে। এমন গল্পের ছবি অনেক দিন পরে দর্শক দেখছে। দর্শকরা ছবিটি উপভোগ করছে। অনেকেই ফোন করে আমাকে জানাচ্ছে। ভারতের সিনেমার সঙ্গে অল্প বাজেটের ছবি নিয়ে আমাকে পাল্লা দিতে হচ্ছে। তবুও দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছি ও পাচ্ছি, এটাই আনন্দের।’