রাজধানীর তেজগাঁওয়ে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবনে স্থাপিত ঢাকা জেলা কেন্দ্রীয় রেকর্ড রুমকে ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। প্রথম ধাপে রেকর্ড রুমে সংরক্ষিত সমুদয় দলিলকে ডিজিটাল ইনডেক্স সিরিয়ালে (সূচিপত্র) আনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কমপ্লেক্সজুড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিয়মিত গণশুনানি চলমান রয়েছে।
সেবাপ্রার্থীদের সব ধরনের হয়রানি দূর করতে নেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। অভিযোগ বাক্সে জমা পড়া অভিযোগ প্রতি সপ্তাহে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা সাবরেজিস্ট্রার এবং বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অহিদুল ইসলাম।
গাজীপুর থেকে ঢাকায় যোগদানের দুই মাসের মধ্যে তিনি ব্যাপক সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। সেবা ও সৌন্দর্যের কাক্সিক্ষত মানে উন্নীত করতে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সকে তিনি বদলে দিতে চান। এ প্রসঙ্গে জেলা রেজিস্ট্রার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমার প্রথম লক্ষ্য সেবার মান নিশ্চিত করাসহ সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি দূর করা।
দ্বিতীয়ত, দলিল রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে যেনতেন কারণে কেউ যেন কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করতে চাই। এজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’ অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রেকর্ড রুমের ইনডেস্ক বা দলিলের সূচিপত্র শিগগির ডিজিটাল সার্ভারে এন্ট্রি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ এটি বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়ে তিনি রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে একধাপ এগিয়ে নিতে চান।
তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত গণশুনানি নেওয়া হচ্ছে। এটা নির্ধারিত দিন। এছাড়া সেবাপ্রার্থীদের জন্য তার দরজা সব সময় খোলা। অফিস স্টাফদের বলা আছে, কেউ যেন সাক্ষাৎ করতে এসে ফিরে না যান।
সূত্র জানায়, জেলা রেজিস্ট্রার ইতোমধ্যে তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করেছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও প্রতিদিন এখানে আসা শত শত সেবাপ্রার্থীর কথা চিন্তা করে পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ময়লার বিন স্থাপন করা হয়েছে। ১ ও ২নং ভবনের ছাদে জমে থাকা পানি অপসারণ করা হয়েছে।
কমপ্লেক্স ভবনকে মশামুক্ত করতে প্রতিদিন বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকে হেল্প ডেস্কে নিয়মিত স্থায়ী কর্মচারী ছিল না। যে কারণে সেবাপ্রার্থীদের সমস্যা হতো। সম্প্রতি হেল্পডেস্কে স্থায়ীভাবে কর্মচারী পদায়ন করা হয়েছে। দেওয়াল রং করার কাজ চলছে। রেকর্ড রুম ভবন ও ১নং ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়া বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবনকে সম্পূর্ণ দালালমুক্ত করতে শিগগিরই সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। ইতোমধ্যে দালালদের নাম ও পরিচয় চিহ্নিত করে প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্নীতিবিরোধী ইনহাউজ অ্যাকশন প্ল্যানও হাতে নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, অহিদুল ইসলাম গাজীপুর জেলা থেকে বদলি হয়ে ৬ জুন ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার হিসাবে যোগ দেন। তেজগাঁওয়ে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে ১০টিসহ ঢাকা জেলায় ২১টি সাবরেজিস্ট্রেশন কার্যালয় রয়েছে। রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবনে রয়েছে ঢাকা সদর, উত্তরা, খিলগাঁও, বাড্ডা, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, গুলশান, ধানমন্ডি ও পল্লবী রেজিস্ট্রি অফিস। এছাড়া এখানে রয়েছে রেকর্ড রুম বা ঢাকা জেলা কেন্দ্রীয় মহাফেজ খানা। এখানেও একজন সাবরেজিস্ট্রার কর্মরত।