সোনালী ব্যাংকের পাবনার ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক মো. সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী গ্রাহকের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাকে ঈশ্বরদী শাখা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়াও তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে সোনালী ব্যাংক পাবনা রিজিওনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. মনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার (১২ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক ঈশ্বরদী শাখায় এসব ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়েন্দা শাখার এক সদস্য মারা যাওয়ার পর তার মেয়ে রেলওয়ে থেকে পাওনা টাকা সোনালী ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখার মাধ্যমে উত্তোলনের জন্য ৯ জুলাই অ্যাকাউন্ট খুলতে যান।
সেদিনই তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন ব্যাংকটির ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম। বাড়িতে গিয়ে মোবাইলে ভিডিও কলে বোরকা খুলে কথা বলতে বলেন। তখন ওই নারী মানসম্মানের কথা চিন্তা করে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। এরপর বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের খুলে বলেন।
বুধবার দুপুরে ওই নারী ব্যাংক হিসাবে নমিনীর তালিকায় বোনের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামের কক্ষে যান। তখন তিনি পুনরায় তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন ও কুপ্রস্তাব দেন। রাগ করে ওই নারী বের হওয়ার সময় তার ছোট বোন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামের কক্ষে গেলে তার সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেন। এরপরই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে সাইদুল ইসলামকে পায়ের জুতা খুলে মারপিট করেন। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর আত্মীয়-স্বজন ব্যাংক ঘেরাও করে ব্যবস্থাপককে কয়েক ঘণ্টা নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে বুধবার রাতে ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী নারী গ্রাহক বলেন, সোনালী ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম খুবই খারাপ মানুষ। তার মতো একজন হীন মানসিকতার মানুষকে ব্যাংকের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া উচিত। তিনি যেখানে যাবেন সেখানেই নারীদের সঙ্গে এ রকম আচরণ করবেন। তার শাস্তির দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
অভিযুক্ত সোনালী ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম বলেন, আমার ভুল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপনারা লেখালেখি করবেন না।
সোনালী ব্যাংক পাবনা রিজিওনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখায় যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক, নিন্দনীয়। এতে ব্যাংকের সুনামহানি হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামকে বুধবার রাতে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের নিয়মানুসারে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণসহ কুপ্রস্তাব দেওয়ার লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।