কিশোরগঞ্জের মানিকখালি ও সরারচর স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় ট্রেন থামিয়ে যাত্রী না তোলায় মণ্ডলভোগ বারুণী মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ করেছে চলন্ত ট্রেনে। এতে ট্রেনটির চালকসহ অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হয়েছেন।
রোববার রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জগামী আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, রোববার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জগামী আন্তঃনগর এগারসিন্দু এক্সপ্রেস ট্রেনটি মধ্যরাতের মানিকখালি এলাকায় পৌঁছলে, সেখানে মেলায় অংশ নেওয়া যুবকরা ট্রেন থামিয়ে উঠতে চান। জায়গাটি কোনো স্টেশন না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ না দাঁড়িয়ে ট্রেন চালিয়ে যায়।
এ সময় মেলায় অংশ নেওয়া যুবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে চলন্ত ট্রেনটি লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। এতে ট্রেনের ভেতরে অবস্থান করা বিভিন্ন বয়সের যাত্রীর মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবাই এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এর পরও যুবকদের ছোড়া পাথরের আঘাত থেকে রেহাই পাননি সাধারণ যাত্রীরা।
এ নির্বিচার পাথর হামলায় অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে শুধু যাত্রীরা নয়, ট্রেনে অবস্থান করা সহকারী চালক মো. কাওছার হোসেন গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া ট্রেনটির লুকিংগ্লাসসহ চালক ও পরিচালকের রুমের জানালার কাঁচ চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছে পাথরের আঘাতে।
এদিকে আহত সহকারী ট্রেনচালক মো. কাওছার হোসেন তার নিজ ফেসবুক আইডিতে চলন্ত ট্রেনে হামলার একটি ভিডিও শেয়ার দেন, যা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে তিনি লিখেন, মানিকখালী স্যাংশনে যে মেলা হয়, সেখানে স্টপেজের কোনো অনুমতি নেই। সুতরাং ট্রেন দাঁড়ানোর যুক্তিই আসে না। সেই স্থানে না দাঁড়ানোর জন্য একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ করে যাত্রীদের আহত করেছে। আমার হাত কেটে গেছে। প্রাণে বেঁচে গেছি এ জন্য মহান আল্লাহতায়ালার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য— চলন্ত ট্রেনে যে পাথর ছুড়ে যাত্রীদের আহত করেছে, এটা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের কাজ নয়।
রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার ইউসুফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনাটি ট্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তা ছাড়া ট্রেনে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যরাও তাদের কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন।