ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশের গোড্ডা জেলায় আদানি গ্রুপের নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। বিদ্যুৎ বিভাগ রাত ৯টার দিকে এ তথ্য জানায়।
সঞ্চালন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য কর্মকর্তা এবিএম বদরুদ্দোজা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাতটা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ শুরু করে আদানি পাওয়ার।
এ ব্যাপারে আদানি পাওয়ারের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আপাতত ২৫ মেগাওয়াট যাচ্ছে। পরে ধাপে ধাপে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে। তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ৭৪৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলক উৎপাদন ও সরবরাহ ঠিক থাকলে এরপর বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ শুরু হবে। তখন থেকেই বিদ্যুতের বিল হিসাব করা হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশ গ্রিডের সঙ্গে সিন্ক্রোনাইজ করে ভারতের ঝাড়খন্ডের আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী মনাকষা থেকে রহনপুর হয়ে বগুড়া পর্যন্ত ১৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং বগুড়ায় ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমবার বাংলাদেশ সফর আসলে সে সময় বেশ কিছু চুক্তি সই হয়। এরই অংশ হিসেবে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করা হয় ২০১৭ সালে। চুক্তি অনুযায়ী পিডিবি ২৫ বছর ধরে আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কিনবে।
তবে, সম্প্রতি আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তির বেশ কিছু বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কয়লা আমদানির মূল্য কমাতে আলোচনার জন্য আদানি পাওয়ার লিমিটেডকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে গত মাসে আদানির একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে আলোচনায় বসে। তারা জানায়, তাদের কয়লার দাম পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দামের চেয়ে বেশি হবে না। তবে এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।