নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন, নড়াইলের মাটি বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘাঁটি। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে নড়াইলের আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী সবচেয়ে বেশি নির্ভার থেকেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে নড়াইলের আসনের চেয়ারটা উপহার দিতে পারি, সমস্ত বিভেদ ভুলে সকলে একত্রিত হয়ে সেজন্য কাজ করবো।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘শান্তি সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালের বঙ্গবন্ধু মঞ্চে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মাশরাফি বলেন, বিএনপি-জামায়াত কে কি করলো তাদের নিয়ে না ভেবে আমরা সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হয়ে আমাদের নেত্রীর হাতকে আরও মজবুত করার দিকে মনোনিবেশ করি। অন্যদের পরাজিত করার কথা না ভেবে নিজেদের জয়ের ব্যাপারে সুদৃঢ় হয়ে কাজ করি। নিজেদের জয়ের আনন্দটা সব সময় প্রশান্তি এনে দেবে।
তিনি আরও বলেন, আজ যারা শান্তি সমাবেশে এসেছেন তারা আমাকে দেখে নয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে এসেছেন। এখানে আমি আপনি একই, প্রধানমন্ত্রী আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। কাল হয়তো আমার জায়গায় অন্য কেউ আপনাদের সেবা করার সুযোগ পাবেন। নমিনেশন কে পেল সেটা মুখ্য বিষয় নয়, আমাদের সকলের উদ্দেশ্য নৌকাকে বিজয়ী করা। দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর প্রত্যাশা প্রাপ্তির জায়গায় ক্ষোভ থাকতেই পারে। আপনারা অনেকে ভাবতে পারেন আমাকে দাওয়াত দেননি, আমি কেন যাব? এখন না হয় আপনাকে মুঠোফোনে দাওয়াত দিলো না, কিন্তু আপনারা তো বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে ভালোবেসে দল করতেছেন। মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক প্রোগ্রামগুলোয় অংশ নিয়েছেন। আপনারা বিশ্বাস করুন প্রধানমন্ত্রী নড়াইলের সর্বস্তরের জনগণকে ভালোবাসেন। আপনাদেরকে সুনজরে দেখেন।
মাশরাফি বলেন, আমি বা অমুক তমুকের দিকে না তাকিয়ে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে আমাদের সকলের নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর জন্য এক হয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য একত্রিত হয়ে কাজ করেন। ভোর রাতে রওনা দিয়ে আসছি, আপনাদের সামনে কথা বলছি আবার ঢাকায় ফিরে টিম মিটিংয়ে অংশ নিব ইনশাআল্লাহ। আমাদের এই অবহেলিত নড়াইলের যাতায়াত ব্যবস্থা সুগম হয়েছে পদ্মা সেতু, মধুমতি সেতুর কারণে। আর এসব উন্নয়নের জন্য একমাত্র কারিগর আমাদের প্রধানমন্ত্রী। আমরা সকলেই তার কর্মী।
তিনি বলেন, আমি বিগত চার বছরে আপনাদের সেবা করার চেষ্টা করেছি মাত্র, কাজ কতটুকু করতে পেরেছি তা আপনাদেরই সামনে। তবে এটুকু বলতে পারি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি। তৃণমূল পর্যায়ের আপনাদের যার যা অভিযোগ আছে আমাকে বলবেন, আমি সমাধানের চেষ্টা করব। আপনারা কাজ করেন, নেত্রীর নির্দেশে আপনাদের দক্ষতায় সাংগঠনিক চেয়ারগুলো পেয়ে যাবেন। পদের জন্য কারো সুপারিশের দরকার হবে না ইনশাআল্লাহ। এই শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সব নেতাকর্মী ভাইদের কাছে বিনীত অনুরোধ- আসুন আমরা সকলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য একত্রিত হয়ে কাজ করি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসের সভাপতিত্ব এবং সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট গোলাম নবী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্ত্তী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ জালাল মুকুল প্রমুখ।