পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোর দাস। এরপর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে মন্ত্রীর সম্পত্তি।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজ্যটির ঝাড়সুগুদা জেলার ব্রজরাজনগরের গান্ধী চকের কাছে গুলির ঘটনাটি ঘটে। এরপর হাসপাতালে নিলে রাতেই মৃত্যু হয় তার।
ভারতীয় গণমাধ্যম অন ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, বিজু জনতা দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন নব কিশোর। বেশ প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন নব কিশোর দাস। একইসঙ্গে ওড়িশার সবচেয়ে ধনী মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
জানা যায়, নব কিশোরের দখলে ৪০টির মতো গাড়ি রয়েছে। প্রায় সবগুলোই দামি। এছাড়া একাধিক হোটেল এবং পরিবহণ ব্যবসা ছিল তার। ব্যবসাতেও বেশ সফল ছিলেন সাবেক এ মন্ত্রী।
এছাড়াও বেশ কয়েকদিন আগে মহারাষ্ট্রের শনিমন্দিরে ১ কোটি টাকা মূল্যের সোনার কলসি দিয়ে পূজা দিয়েছিলেন এ মন্ত্রী। এরপরই আলোচনায় উঠে আসেন এ মন্ত্রী।
অন ইন্ডিয়ার খবরে আরও বলা হয়, বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেও নব কিশোর দাস ছিলেন দক্ষ মন্ত্রী। পর পর তিনবার নির্বাচনে জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। করোনা মোকাবিলায় খুব ভাল কাজ করেছিলেন এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দক্ষতার সঙ্গে রাজ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণ করে বড় সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি।
এদিকে মন্ত্রী নব কিশোরকে গুলি করা ওই পুলিশ কর্মকর্তার পদ সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোর দাসকে রোববার ঝাড়সুগুদা জেলার ব্রজরাজনগরের গান্ধী চকের কাছে এক সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর গুলি করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে তাকে গুলি করা হয় এবং সেটি তার বুকে লাগে। পরে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোর দাস তার গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার সময় তাকে গুলি করা হয়। হামলার পেছনের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘রোববার পূর্ব নির্ধারিত একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নব কিশোর দাস। তিনি ঘটনাস্থলে এলে তাকে স্বাগত জানাতে ভিড় জমে যায়। এর মধ্যেই হঠাৎ গুলির শব্দ শোনা যায়। আমরা একজন পুলিশ সদস্যকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যেতে দেখেছি।’
বার্তাসংস্থা এএনআই বলেছে, রোববার দুপুরে ওড়িশার শাসক দল বিজিডির একটি নতুন দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব দাস। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝাড়সুগুদা জেলার ব্রজরাজনগরে ওই দলীয় কার্যালয়ের সামনে পৌঁছান তিনি। গাড়ি থেকে নেমে দলীয় কার্যালয়ের দিকে এগোতেই হঠাৎ তার ওপর গুলিবর্ষণের এই ঘটনা ঘটে।
মন্ত্রীকে গুলি করা ওই পুলিশ কর্মকর্তা গান্ধী চক পোস্টে ডিউটিতে ছিলেন। মন্ত্রী আসার খবর পেয়ে তিনি দলীয় কার্যালয়ের কাছে যান। মন্ত্রী গাড়ি থেকে নামতেই তিনি নিজের সার্ভিস রিভলভার দিয়ে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালান। গুলি চালানোর পরই ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করা হয়।
ওড়িশার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওড়িশা টিভি জানিয়েছে, অভিযুক্ত গোপাল দাস মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়া তার উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা আছে। মন্ত্রীকে গুলি করার ক্ষেত্রে পুলিশ কর্মকর্তার অসুস্থতার সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।