কক্সবাজারের চকরিয়ায় দুপুরে বাবার জানাজার পর রাতে ভূমিষ্ঠ হলো কন্যাসন্তানের। জন্মের আগেই এতিম হলো। দেখা হয়নি বাবা-মেয়ের!
শাহজাহান মনির কন্যাসন্তানের বাবা হলেন। অথচ বিধাতার কি নিয়তি! কিছু সময়ের ব্যবধানে শাহজাহান দুই চোখে দেখে যেতে পারেননি তার আদরের প্রিয় সন্তানকে। একইভাবে তার কন্যাও দেখতে পারেনি বাবাকে। বাবা শব্দটি কোনো দিন ডাকা হবে না তার।
চকরিয়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মনির (৪০) ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শাহজাহানের স্ত্রী রুশনি জান্নাত।
শাহজাহান মনিরের চাচাতো ভাই আরাফাত বলেন, কয়েক মাস আগে শাহজাহানের লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। বাংলাদেশে কিছু দিন চিকিৎসা করার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের হায়দরাবাদের এআইজি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে কেমোথেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেন।
পরে দেশে ফিরে চট্টগ্রামের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল আউয়ালের তত্ত্বাবধানে ছয়টি কেমোথেরাপি নেন তিনি। তবে অবস্থার অবনতি হলে শাহজাহানকে আবার হায়দরাবাদে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে গত মঙ্গলবার শাহজাহান দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার রাতেই মৃত্যুবরণ করেন।
শাহজাহানের স্ত্রী রুশনি জান্নাত বলেন, সানজিদা হক রাফা নামের তাদের আড়াই বছর বয়সি আরেকটি মেয়ে আছে। শাহজাহানই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। এখন দুই মেয়েকে নিয়ে অথই সাগরে পড়েছেন তিনি।
শাহজাহানের চিকিৎসার পেছনেও অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি শাহজাহানের সঙ্গে রুশনির বিয়ে হয়েছিল। শাহজাহানের লাশ দাফনও করা হয় একই তারিখে। আবার ওই তারিখেই শাহজাহানের দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হলো।