ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেম্বার ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পূর্ব বিরোধের জেরে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুরে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অন্তত ২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন ও এ সময় স্থানীয় বাজারের ১৩টি দোকানে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের রেলগেইট থেকে স্কুলছাত্র রিমন সিএনজি চালিত অটোরিকশা করে দূর্গাপুর গ্রামে আসেন। এ সময় সিএনজি চালক রহুল আমিন ২০ টাকার স্থলে ৩০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে স্কুলছাত্র রিমনকে মারধর করেন সিএনজি চালক রুহুল আমিন। পরবর্তীতে স্কুলছাত্র রিমন বিষয়টি তাদের দূর্গাপুর গ্রামের হাজী বংশের মিজান মিয়া মেম্বারকে অবগত করে। মিজান মিয়া মেম্বার বিষয়টি সিএনজি চালক রহুল আমিনের বংশের জারু মিয়া বাড়ীর প্রধান দূর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল মিয়াকে অবগত করেন।
পরে ফেরার পথে মিজান মিয়া মেম্বারের ওপর হামলা চালায় চেয়ারম্যানের লোকজন। এই খবর পেয়ে হাজী বংশ ও চেয়ারম্যানের গোষ্ঠী জারু মিয়ার বংশের লোজজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এই ঘটনার জের ধরে আবার পরদিন শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আবারও দুই বংশের লোকজন দফায় দফায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ওইদিন দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা সংর্ঘষে আহত হন আরও ৩০ জন। এই সময় সংঘর্ষ পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। তবে হাজী বংশের পক্ষে মোল্লাবাড়ি, হাজী ইউসূফ পাড়া ও শরিয়ত উল্লাহ পাড়া এবং জারু মিয়া বংশের পক্ষে নজর বাড়ি, মুন্সিবাড়ি, বামু মুন্সির বাড়ি ও নূরারপাড় বাড়ি লোকজন অংশগ্রহণ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এই ঘটনার জের ধরে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের গোষ্ঠীর লোকজন বুধবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মেম্বারের গোষ্ঠীর একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ সময় স্থানীয় বাজারের ১৩টি দোকানে অগ্নিসংযোগ দেওয়া হয়। পরে দমকল বাহিনীর সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই বিষয়ে জানতে দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাসেল মিয়ার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। ইউপি সদস্য মিজান মিয়ারও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবরে আমরা সেখানে গিয়েছি। মুদি, ফার্মেসিসহ বিভিন্ন প্রকার ১৩টি দোকান অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়েছে। আমাদের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দমকল বাহিনীর দলও অংশগ্রহণ করে।
এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জয়নাল আবেদীন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত আরও ৩৫ জন পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।