রাজশাহী নগরীর রামচন্দ্রপুর বৌবাজার এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা তাবাসসুম খান। চার বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে একই এলাকার ফজলে রাব্বী নামের এক যুবকের সঙ্গে।
সোমবার রাতে বাবার বাড়ি ছেড়ে ধরেছেন প্রেমিকের হাত এরপর করেছেন। বাবার অপহরণ মামলা থেকে প্রেমিককে বাঁচাতে বুদ্ধি করে মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের বিয়ের খবর জানান নবদম্পতি।
বুধবার সকালে রাজশাহী মহানগরীর আসাম কলোনী এলাকায় এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফাতেমা তাবাসসুম সাংবাদিকদের জানান, স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে নিজের পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেছেন তিনি। কেউ তাকে জোর করে বাড়ি থেকে নিয়ে আসেনি।
ফাতেমা বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসেছি। এখন শুনছি, আমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অপহরণের মামলা করা হচ্ছে। আমি জানিয়ে দিচ্ছি, আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অপহরণ নাটক না সাজানোর জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করেন ফাতেমা। পরিবারের পক্ষ থেকে রাব্বীর সঙ্গে সম্পর্ক করার জন্য তার ওপর অনেক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ফজলে রাব্বী জানান, চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক তাদের। ফাতেমার বাবা-মা এ সম্পর্কের কথা জানার পরও ফাতেমাকে বিয়ে দিতে চাননি তার সাথে। উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে তাকে। এতেও প্রেমের সম্পর্ক ভাঙতে না পেরে ২০১৯ সালের দিকে ফাতেমাকে সৌদি আরবে নিয়ে জোর করে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়।
রাব্বী বলেন, ফাতেমা সেখানে সংসার করতে পারেননি। বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেড় বছর পর ২০২১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকেই বাড়িতে তার ওপর নির্যাতন চলছিল।
‘এখন ফাতেমার পরিবার থেকে হয়তো অপহরণের মামলা করা হবে। পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করবে। জেল খাটতে হবে। এ সবই জানি। সবকিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখছি। আর আস্থা রাখছি ফাতেমার ওপর। তবে মামলা হলে পরে অন্ততঃ ফাতেমা আদালতে গিয়ে বলবে যে, কেউ তাকে অপহরণ করে আনেনি। প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেই সে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বিয়ে করেছে’ বলেন রাব্বী।
মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, রাতেই ফাতেমার পরিবার থেকে অপহরণের একটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক যদি মেয়ে নিজের ইচ্ছায় যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আর তাই, আইনগতভাবেই সবদিক বিবেচনা করেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।