টাঙ্গাইলে এক প্রবাসীর হারিয়ে যাওয়া এক লাখ টাকা কুড়িয়ে পেয়ে প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রী। এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষার্থী প্রশংসায় ভাসছে। তার এমন সততায় খুশি মাদরাসার শিক্ষক ও এলাকাবাসী। ওই শিক্ষার্থী বাবাও একজন প্রবাসী।
বুধবার (৪ জানুয়ারি ) দুপুরে সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া আক্তার টাকার মালিক কুয়েত প্রবাসী আশরাফুল ইসলামের হাতে এক লাখ টাকা তুলে দেয়।
মারিয়া উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী ফরহাদ হোসেনের মেয়ে এবং টাকার মালিক একই গ্রামের গফুর আলীর ছেলে।
জানা যায়, সকালে মারিয়া ও তার সহপাঠী রাবিয়া মাদরাসায় যাচ্ছিল। এসময় রাস্তায় মারিয়া এক হাজার টাকার নোটের একটি বান্ডিলের ব্যাগ দেখতে পায়। পরে টাকার ব্যাগটি হাতে নিয়ে প্রকৃত মালিকের সন্ধান করতে থাকে। কিন্তু সেখানে কাউকে না পেয়ে টাকা মাদরাসায় নিয়ে যায়। মাদরাসায় কোনো শিক্ষককে না পেয়ে টাকার বান্ডিল চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী শফিকুলের হাতে তুলে দিয়ে কুড়িয়ে পাওয়ার বিষয়টি জানায়।
এর আগে আশরাফুল সম্প্রতি কুয়েত থেকে বাড়িতে এসে বুধবার ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তার টাকার বান্ডিলটি পড়ে যায়।
শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার জানায়, টাকা ভর্তি ব্যাগ পেয়ে প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। নিজে নিজে কিছুক্ষণ টাকার মালিককে খুঁজেছিলাম। ভয়ে সেখানকার কাউকে ঘটনাটি না জানিয়ে মাদরাসায় চলে যাই। মাদরাসায় শিক্ষকদের না পেয়ে টাকার বান্ডিলটি অফিস পিয়ন শফিকুলের হাতে তুলে দিই। আমার বাবাও একজন প্রবাসী। অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে যারা প্রবাসীরা।
কুয়েত প্রবাসী আশরাফুল বলেন, সকালবেলা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় কখন যে টাকাটা পড়ে গেছে বুঝতে পারিনি। পরে জানতে পারি ওই মেয়েটি টাকাটা পেয়েছে। পরে টাকার সঠিক বর্ণনা দিলে মিলে যায়। মারিয়া ও তার সহপাঠির সততা দেখে অবাক হয়ে গেছি। তারা চাইলে কাউকে না বলে নিজেদের কাজে খরচ করতে পারতো।
উপজেলার কালিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার শিক্ষক সাজ্জাত লতিফ বলেন, দুপুর থেকেই কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়েটির সততার বিষয়ে প্রশংসা করে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। মারিয়া আমাদের মাদরাসার গর্ব। তার সততায় শিক্ষকরা গর্বিত।