ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি ও রাজের সংসারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ না হলেও দুজন আলাদা ছাদের নিচে থাকছেন। রাতের আঁধারে সন্তানকে নিয়ে রাজের বাসা থেকে বেরিয়ে গেছেন পরী।
পরীমনি ফেসবুকে একের পর এক স্ট্যাটাস দিয়ে দুজনের দূরত্বের বিষয়গুলো সামনে আনছেন। বুঝিয়ে দিচ্ছেন, রাজের সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
স্বামী রাজের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এনেছেন পরীমনি। গুরুতর অভিযোগটি হচ্ছে— রাজ তাকে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। একাধিকবার তার গায়ে হাত তুলেছেন।
দুদিন আগে ফেসবুকে এক পোস্টে বিছানায় রক্তের ছোপের ছবি দিয়েছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি, ১২ ঘণ্টা পর আরেক পোস্টে স্বামী চিত্রনায়ক শরিফুল রাজের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ আনেন তিনি।
আগের পোস্টে বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসার কথা জানিয়েছিলেন পরীমনি; তবে পরবর্তী পোস্টে প্রায় ১ হাজার শব্দে নানা বক্তব্য তুলে ধরে জানালেন, আপাতত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন না তিনি।
রাজের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পরীমনি লিখেছেন— ‘একটা সম্পর্কে পুরোপুরি সিরিয়াস বা খুব করে না চাইলে একটা মেয়ে, বাচ্চা নেওয়ার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কখনই। আমার জীবনের সবটুকু চেষ্টা যখন এই সম্পর্কটাকে ঠিকঠাক টিকিয়ে রাখা, তখনই আমাকে পেয়ে বসা হলো। যেন, শতকোটি বার যা ইচ্ছে তাই করলেও সব শেষে ওই যে আমি মানিয়ে নেই, এটা রীতিমতো দারুণ এক সাংসারিক সূত্র হয়ে দাঁড়াল। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি আমাদের এই সম্পর্ক এতদিন আমার এফোর্টে টিকে ছিল শুধু।’
তবে এখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে দাবি করে পরীমনি লিখেছেন— ‘কিন্তু বারবার গায়ে হাত তোলা পর্যায়ে পৌঁছালে কোনো সম্পর্কই আর সম্পর্ক থাকে না। স্রেফ বিষ্ঠা হয়ে যায়।’
সন্তানের দিকে তাকিয়ে সব ভুলে থাকার চেষ্টা করেছিলেন দাবি করে এ নায়িকা লেখেন, ‘রাজ্যের দিকে তাকিয়ে বারবার সব ভুলে যাই। সব ঠিক করার জন্য পড়ে থাকি। কিন্তু তাতে কি আসলেই আমার বাচ্চা ভালো থাকবে! না । একটা অসুস্থ সম্পর্ক এত কাছে থেকে দেখে দেখে ও বড় হতে পারে না। তাই আমি, রাজ্য এবং রাজের মঙ্গল এর জন্যেই আলাদা হয়ে গেলাম।’
এখনই সংবাদ সম্মেলনে না আসার কারণ ব্যাখ্যা করে পরীমনি লিখেছেন, রাজ এখন শুধু আমার প্রাক্তনই না, আমার ছেলের বাবাও। তাই রাজ্যের বাবার সম্মান রাখতে পাবলিকলি আর বাকি কিছু বলছি না আমি।
শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত দাবি করে পরী বলেন, সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মী যারা রয়েছেন, আপনারা নিশ্চয়ই আমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারবেন আশা করছি। আমাকে একটু সময় দিন। শারীরিকভাবেও আমি বিধ্বস্ত।
তবে পরীমনি হুশিয়ার করেছেন, তিনি কোনোভাবে আক্রান্ত হলে কঠোর পথে যাবেন।
‘আমার ওপর সে আর তার পরিবারের কোনো অসুস্থ আচরণ বা হার্মফুল কিছু করার চেষ্টা করলে আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।’
পরীমনি ২০২২ সালে সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর শরিফুল রাজের সঙ্গে তার বিয়ের খবর জানান। গত আগস্টে এ তারকা দম্পতির সন্তান রাজ্যের জন্ম হয়।
তবে গত কয়েক মাস ধরে তাদের দাম্পত্যে টানাপোড়েন চলছিল ঢাকাই সিনেমার এক নায়িকাকে ঘিরে। কিছু দিন আগে পরীমনি ফেসবুক পোস্টে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের সঙ্গে রাজকে জড়িয়ে পোস্ট দিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন।
এর পর গত ৩ ডিসেম্বর একসঙ্গে চট্টগ্রামে স্টার সিনেপ্লেক্সের একটি শাখা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন পরী আর রাজ। তবে ২০ ডিসেম্বর পরীমনি ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে সন্তানকে নিয়ে একাই হাজির হন।
এর পর গত শুক্রবার হঠাৎ এক পোস্টে পরীমনি বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দিয়ে লেখেন— আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও মুক্ত করলাম একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে।