বাঘ তাড়াতে রাত জেগে পাহারা

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নে বাঘ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। ইতোমধ্যে বাঘ তাড়াতে টর্চ ও লাঠিসোটা হাতে নিয়ে পাহারায় নেমে পড়েছেন স্থানীয় যুবক ও সাধারণ মানুষ।

সোমবার মধ্যরাতে ঘিলাছড়া ইউনিয়নের জিরোপয়েন্ট এলাকা ও মইমাড়া টিলা এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হয় ‘এলাকায় বাঘ ঢুকেছে, সবাই সাবধানে চলাফেরা করুন’। এরপর এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে বাঘ তাড়াতে বের হন রাতেই।

রাত পাহারায় থাকা যুবকরা জানান, কয়েক দিন ধরে এলাকায় মেছোবাঘ এসেছে। গরু, ছাগল ও মুরগি মেরে ফেলেছে। বাঘ দেখার পর কিভাবে মানুষ ঘুমাবে। এজন্য এলাকার যুবক ছেলেরা সবাই মিলে লাঠিসোটা, লাইট ও হারিকেন নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন।

দিলোয়ার হোসেন বলেন, বাঘের ভয়ে দিনের বেলায়ও কেউ একা একা রাস্তায় বের হচ্ছেন না। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ধারণ গাজীপুর গ্রামের হাসান আল মাজেদ বলেন, গত সপ্তাহে আমাদের গ্রামের লেজু মিয়া বাঘের আক্রমণে আহত হওয়ার পর থেকে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে কেউ সন্ধ্যার পর বের হন না। এর মধ্যে কয়েক দিন ধরে এলাকার বিভিন্ন স্থানে বাঘ দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।

গ্রামের একাধিক লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘিলাছড়া এলাকায় টিলা বেশি। সেজন্য এলাকাবাসীর মধ্যে বাঘ আতংক বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর ধারণা বাঘ আবার বের হয়ে যে কোনো সময় মানুষকে আক্রমণ করতে পারে।

ঘিলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লেইছ চৌধুরী বলেন, একটি বাঘ দেখা গেছে বলে আমাকে গ্রামের লোকজন জানিয়েছে। বাঘটি ধারণ গাজীপুর ও বিয়ালীবাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লেজু মিয়াকে একটি মেছোবাঘ আক্রমণ করার পর থেকে মানুষের মধ্যে বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন বলেন, মেছোবাঘ না মারার জন্য ও এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার জন্য বলেছি।

সিলেট বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা (ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার) শহিদুল্লাহ বলেন, মেছোবাঘ খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে সম্ভবত এসেছিল। মেছোবাঘ নিরাপদ স্থান না পাওয়ায় সে যেখানে আশ্রয় নেয়, কোনো কোনো পরিস্থিতিতে মানুষের ওপর আক্রমণ করতে পারে। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে আমরা বিষয়টি শুনেছি।