পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার কিছু পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মী স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে এই হামলা চালান। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেটে পবিপ্রবির ছাত্রলীগ, স্থানীয় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে এই সংঘর্ষ ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন, সোহেল রানা, মো. জাহিদ, মো. সানিউল ইসলাম, জয়, মো. মেহেদী, জাহিদ হাসান ও রাফসান।
আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ারে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সবাই ছাত্রলীগ কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর পবিপ্রবি ছাত্রলীগ একটি আনন্দ মিছিল বের করে। আনন্দ মিছিল শেষে পবিপ্রবির ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে গোলাম রাব্বি নামে একজন ছাত্র তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরই জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম সাগর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাকে এবং মেহেদী হাসান তারেককে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেন। আমি এবং সাধারণ সম্পাদক সবাইকে নিয়ে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই। কিন্তু তারা তাতে সাড়া না দিয়ে ১৪ ডিসেম্বর এবং ১৬ ডিসেম্বর আলাদাভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। আজ রাতে স্থানীয় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ বহিরাগতদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ওপর হামলা করলে আমাদের আটজন কর্মী আহত হয়। ’
আরাফাত ইসলাম সাগর আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে এই হামলা চালায়। এদের মধ্যে মো. সাইফ হোসেন (বিবিবি, ১৫-১৬ সেশন), হাসান মাহমুদ (পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ১৫-১৬ সেশন), মো. মোহসিন হোসেন (ব্যবসায় প্রশাসন ১৫-১৬ সেশন), আবুল খায়ের রাব্বি (পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ১৭-১৮ সেশন), আব্দুল্লা আল কাওছার (সিইসি, ১৬-১৭ সেশন), মো. ফাহাদ হোসেন (ব্যবসা প্রশাসন, ১৬-১৭ সেশন) স্থানীয় বহিরাগত নিয়ে ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ হোসেন বলেন, ‘নতুন কমিটি হওয়ার পর আমরা বিষয়টি মেনে নিয়ে নিজেদের মতো ক্যাম্পাসের অবস্থান করছি। আমাদের অনেক ছোট ভাই রাজনীতি করছে। তাদের মারধর ও হেনস্তা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে স্থানীয় শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বিকে মারধর করা হয়। এনিয়ে মীমাংসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও দুমকী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা বসেন। সমাধান না করেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর স্থানীয় নেতাকর্মীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। ’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটির দৌড়ে অনেকেই থাকেন। কিন্তু সবাই পদ পাবেন না। যারা পদ পেয়েছেন এবং যারা পাননি, তাদের আমরা একত্রে কাজ করতে বলেছি। তবু আজ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ও স্থানীয় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১০ জন আহত হয়। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় হেলথ কেয়ারে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ’