২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও ফিনল্যান্ড প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান মুন্না (৩৫)। বুধবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ।
মুন্না কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের চকের গ্রামের বাসিন্দা মো. হিরা মিয়ার ছেলে ও ফিনল্যান্ড প্রবাসী। বর্তমানে মুন্না সিলেটের শাহপরান থানার শিবগঞ্জের সোনাপাড়া এলাকায় বসবাস করছেন।
জানা গেছে, সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান মুন্না ও তার ভাই বেলাল আহমদের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলা করেন কুলাউড়ার ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলাম।
পরবর্তীতে মামলাটি পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অব ব্যুরো তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর মুন্না ও তার ভাই বেলালের বিরুদ্ধে চলতি মাসের ৭ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান ও সিলেটের শাহপরান থানার শিবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলাম তাঁর ১৬ শতক জায়গায় নির্মাণাধীন এসপি টাওয়ার-৩ নামে একটি ভবনের ৬ষ্ঠ তলার কাজ চলমান থাকা অবস্থায় সাজ্জাদুর রহমান মুন্না ও তার ভাই বেলাল আহমদ কাজে বাধা প্রদান করেন।
ঘটনার দিন সাজ্জাদুর রহমান মুন্না ও তার ভাই বেলাল আহমদ লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ ভবনের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দেয়। এসময় তারা শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে বলে এই ভবনের মালিককে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। ২০ লাখ টাকা চাঁদা না দিয়ে টাওয়ারের কাজ করতে পারবে না। তখন ভবনের কাজ বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকে। এরপর ভবন মালিক সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলামকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে চাপ সৃষ্টি করে মুন্না।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী ও ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ভবনের চলাচলের রাস্তায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে প্রতিনিয়ত চাঁদা দাবি করে আসছে মুন্না। চাঁদা দাবিসহ আমার ভবনের কাজে বার বার বাধা প্রদান করায় আমি অতিষ্ঠ। পরবর্তীতে আমি বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করি। আমার বাসার পার্শ্ববর্তী বাসার বাসিন্দা হলো মুন্না। সে আমার ভবনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এমনকি ভবনে চলাচলের রাস্তায় বাসার মানুষদেরকেও যাতায়াতে বাধা প্রদান করেন। আমি আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাফায়েত হোসেন গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে বুধবার রাত ১০টায় এই প্রতিবেদককে বলেন, চাঁদাবাজির মামলায় মুন্না ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। সিলেটের শাহপরান থানা থেকে মুন্নাকে গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চাইলে বুধবার রাতে আমরা মুন্নাকে ফেঞ্চুগঞ্জের হাইওয়ে সড়কের টোল প্লাজা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। পরে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা থেকে শাহপরান থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।